TT Ads
Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদক :
১৯৭৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কোনো জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর-৫ আসনে বিজয়ী হতে পারেনী আওয়ামী লীগ। ফলে আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত নব্বইয়ের দশক থেকে।

তবে এবার এই ধারাবািকতার চ্যালেঞ্জ ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়াবে । বিশেষ করে মহানগর বিএনপির মধ্যে একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বরিশাল মহানগরীতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে সাধারন ভোটারদের অনেকটাই প্রভাবিত করছে বলে মনে করছেন অনেকে। দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেয়া হউক না কেন তাকে বিজয়ী করতে কষ্টসাধ্য হবে বলে ধারনা তাদের।

বরিশাল মহানগর বিএনপি ৪ ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে মহানগর বিএনপির বাইরে যারা রয়েছেন তারাও এর সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

তার মধ্যে আগেভাগে জামায়াত ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী ঘোষনা করায় তারা নির্বাচনী মাঠে থাকলেও বিএনপির প্রার্থী ঘোষনা না হওয়ায় একাধিক প্রার্থী বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে তাদের প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন। করছেন প্রচার প্রচারনা।

কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী এবারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় একটি দল না থাকায় ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে মরিয়া জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার জিয়া, ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খান নাসরিন, সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদসহ একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ায় এর প্রভাব ফেলবে আাগমী সংসদ নির্বাচনে।

এর মধ্যে সদর আসন থেকে প্রার্থী বাছাইয়ে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক কেন্দ্রর ডাকে সাক্ষাৎকার দিয়ে আসলেও বাকিরাও রয়েছেন আশায়।

প্রাথী হতে মরিয়া উপদেষ্টা এ্যাড. মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. বিলকিস জাহান শিরীন, জেলা দক্ষিন বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. আবুল কালাম শাহিন, মহানগর বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।

ইতিমধ্যে ভোট প্রার্থনা করতে মাঠে নেমে পড়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক।

এছাড়া মহানগর বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন ৩০টি ওয়ার্ডের নেতা কর্মিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে নিজেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।

পৃথক এ অবস্থান আর আলাদা হয়ে দলের কর্মকান্ড কতটা সুফল বয়ে আনবে সেটাই দেখার বিষয়। মহানগরে বর্তমান ও সাবেক র্শীর্ষ স্থানীয় নেতারা দলের পক্ষে যাকেই মনোনয় দেয়া হোক সে প্রশ্নে এক থাকলেও । অভ্যন্তরিন কোন্দল প্রকাশ্যে এতটাই বিভাজন সৃষ্টি করেছে সেখানে তারা দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কতটা একত্রীত হয়ে কাজ করবে সেটাই প্রশ্ন থেকে যায়।

এদিকে এ আসনে জামায়াত ইসলামী থেকে একক প্রার্থী ঘোষনা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল এ্যাড. মুয়াযযম হোসাইন হেলালকে।

একইভাবে ইসলামী আন্দোলন থেকে হাতপাখা নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন চরমোনাই পীরের ভাই মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম।

সব শেষ ২০০৮ সালে নির্বাচনে ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্ণেল অব. জাহিদ ফারুক শামীমের সাথে জয়ী হয়েছিলেন বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছীলেন তৎকালীন সদ্য সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন। তার অকাল মৃত্যুর পর সদরে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মজিবর রহমান সরোয়ারকে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৭১৮ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহিদ ফারুক শামীম। এর পর ভোট বর্জনের নির্বাচেনে ২বার এমপি ছিলেন জাহিদ ফারুক। এছাড়া ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি একবার করে বিজয়ী হয় এ আসনে।

তবে এবারের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ইসলামী কোন দলের সাথে জোট বদ্ধ না থাকায় পেক্ষাপট উল্টো সমিকরন আকছে। দেখা গেছে বিগত দিন গুলোতে জামায়াতসহ আওয়ামী-বিরোধী ভোটও পড়ত ধানের শীষে। তবে এবারের হিসাব সম্পূর্ণ ভিন্ন। হাসিনার আমলে ভোট ডাকাতির সিটি নির্বাচনে তীব্র প্রতিরোধের পরও ৩৫ হাজার ভোট পেয়েছিলেন ফয়জুল করিম। বিএনপির ভোটাররা তখন যাননি কেন্দ্রে।

তাছাড়া জামায়াতেরও ভোট ব্যাংক রয়েছে এখানে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন জোট হলে ঘুরে যাবে ভোটের হিসাব। তাই যতটা সহজে জয় পাওয়া যাবে বলে ভাবছে বিএনপি ততটা সহজ হবে না।

তাছাড়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনৈতিক কর্মকান্ডে। বিএনপির এসব দুর্বল জায়গায় আঘাত হেনে ভোটের মাঠে রাজত্ব করতে মরিয়া জামায়াত ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *