খবর ডেস্ক :
বাড়ির পাশে পুকুরে ভাসছে গজার মাছ। এক একটির ওজন ৪-৫ কেজি। তবু ধরেন না কেউ। তার থেকেও আশ্চর্যের বিষয় হলো- বন্যার পানিতে তলিয়ে গেলেও পুকুর ছেড়ে যায় না গজারগুলো।
সকাল হলেই খাবার খেতে তীরে আসে গজার মাছ। যা দেখতে পুকুর পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন দূর-দূরান্তের মানুষ। অনেকে মনোবাসনা পূরণে নিয়ত করে পুকুরে গজার মাছকে খাবার দিচ্ছেন।
অদ্ভুত এমন গজার মাছের সন্ধান মিলেছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের উত্তর ধামুরা গ্রামের বাসিন্দা সান্টু হাওলাদারের বাড়ির পুকুরে।
স্থানীয়দের দাবি- পুকুর দখল করে রাখা গজার মাছ কেউ ধরতে গেলেও শারীরিক বা মানসিকসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তিনি। তাই মারা গেলে রান্না না করে মাটি চাপা দেওয়া হয় রহস্যময় এই গজার মাছ।
সান্টু হাওলাদারের স্ত্রী খাদিজা বেগম জানিয়েছেন, তার স্বামী সন্টু হাওলাদার দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। দেশে ফিরে কীটনাশকের ডিলারের ব্যবসা করতেন। হঠাৎ এক রাতে স্বপ্নে দেখেন, পুকুর ঘাটে গজার মাছের ঝাঁক। তার দাবি- হযরত শাহজালাল (রা.) এর মাজারে গজার মাছ অলৌকিকভাবে এসেছে তাদের পুকুরে। যা সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে গিয়ে মিলিয়েও দেখেছেন তারা।
তিনি বলেন, “পুকুরে থাকা গজার মাছগুলোর বয়স ১৫-২০ বছর হবে। এগুলোর কিছু বিশেষ দিক রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে যখন চারদিক তলিয়ে যায় তখনও পুকুর ছেড়ে যায় না। আবার পুকুরের অন্য মাছও খায় না তারা। সকাল হলেই খাবার খেতে ঘাটে আসে। গজারগুলোকে প্রতিদিন সকালে ছোট মাছ খেতে দেওয়া হয়। আর মারা গেলে মাটি চাপা দেওয়া হয়।”
খাদিজা বেগম বলেন, “প্রথম দিকে আমাদের এক আত্মীয় অবহেলা করে গজার ধরতে এসেছিল। এজন্য সে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকেই গজার মাছের আধ্যাত্মিক শক্তির কথা বিশ্বাস করতে শুরু করে গ্রামবাসী। তবে ১০ শতকের এই পুকুরটিতে বর্তমানে কি পরিমাণ গজার মাছ রয়েছে তা জানা নেই কারোর।”
গজার মাছ ঘিরে এমন অলৌকিক ঘটনা স্বীকার করছেন প্রতিবেশীরাও। তবে গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বাড়ির মালিক সান্টু হাওলাদার। অথচ পুকুরে গজার মাছ ঘিরে নিজের ব্যবসা পরিবর্তন করেছেন তিনি। এখন জিন ছাড়ানো, তাবিজ-কবজ এবং তদবির দিয়ে থাকেন সান্টু হাওলাদার। এ কারণে “সান্টু ফকির” নামে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
সন্টু হাওলাদারের পুকুরে গজার নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভ্রান্ত ধারনা সৃষ্টি হয়েছে তা সম্পূর্ণ কুসংস্কার বলে মন্তব্য করেছেন উজিরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রসেন মজুমদার।
তিনি বলেন, “দেশে বিলুপ্ত প্রজাতির যে ৬৪টি দেশীয় মাছ রয়েছে তার মধ্যে একটি গজার মাছ। মা এবং পুরুষ গজার পোনা ১০ সেন্টিমিটার না হওয়া পর্যন্ত ছেড়ে যায় না। অথচ এই মাছকে অনেকে অমঙ্গলের প্রতীক হিসেবেও দেখে থাকে। তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
সূত্র : দেশকাল নিউজ ডটকম



