নিজস্ব প্রতিবেদক :
তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে মধু ও আখের স্বাস্থ্যসম্মত দানাদার উৎপাদনের কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণ আজ বরিশালের রহমতপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ উপলক্ষ্যে বিএসআরআইর উদ্যোগে এর ক্যাম্পাসে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএসআরআই) মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ।

বরিশাল উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রতন কুমার গনপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম কিবরিয়া, বরিশালের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কিশোর কুমার মজুমদার, বিএসআরআইর সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মুনির হোসেন, প্রশাসন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. নুরে আলম সিদ্দিকী এবং প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শরিফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিএসবিএফ প্রকল্পের প্রকল্প ইন-চার্জ ড. খন্দকার মহিউল আলম, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক, গৌরনদীর মধু উদ্যোক্তা মো. সবুজ হাওলাদার, নাজিরপুরের গুড় উৎপাদনকারী মো. নাঈমুল ইসলাম প্রমুখ। প্রশিক্ষণে ৩০ জন তরুণ অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, কৃষিতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই কৃষি হবে সমৃদ্ধ। তিনি আরো বলেন, উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন কাজ নয়। এজন্য পরিকল্পনা এবং ধৈর্যের দরকার। পাশাপাশি প্রয়োজন সততা। ভোক্তাদের বিশুদ্ধ জিনিস খাওয়াতে পারলে, তারাই খুঁজে নিবে বারবার। অনলাইন কিংবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য চলে যাবে সারাদেশে। এমন হলে চাকরির প্রয়োজন হবে না। বরং অন্যের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দল থেকে সদ্য বহিস্কৃত বাকেরগঞ্জ উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম । এবার চাঁদার টাকা না দেওয়ায় প্রাকশ্যে ব্যসায়ীকে মারধর করেছে।

মসজিদের ফান্ডের ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার সদর রোডে জন সম্মুখে মোশারেফ বিশ্বাস নামক একজনকে মারধরের ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যাতেকরে পুরো বাকেরগঞ্জ উপজেলায় আতংক বিরাজ করেছ।

সূত্রে জানাযায় ২০২৩ সাথের ৬ জানুয়ারী উপজেলার উত্তর-পূর্ব কৃষ্ণ কাটি জামে মসজিদের ফান্ডের ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাত করায় মসজিদ কমিটির সদস্য মোঃ মোশারফ বিশ্বাস থানা সহ বিভিন্ন দপ্তরে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।

সেই অভিযোগর ভিত্তিতে এলাকার গন্য মান্য ব্যক্তিদের মদ্ধস্ততায় আপষ মিমাংশা হয় তখন জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ দেয়। বাকি টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্য সময় নেয়।

কিন্তু গত ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট মোশারফ বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে জাহাঙ্গীর ও তার দলবল মসজিদে দেয়া জাহাঙ্গীরের ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জনসম্মুখে ফেরৎ দেয়ার জন্য মোশারফ বিশ্বাসকে দায়ী করে তার কাছে ২,৫০,০০০ টাকার দ্বিগুণ ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। সেই সূত্র ধরে গতকাল ২৭ নভেম্বর দুপুরে বাকেরগঞ্জ সদর রোডস্থ একটি দোকানের ভিতরে জাহাঙ্গীর আলম, শাফায়েত খা সহ অন্যান্যরা লুকিয়ে থাকে। যখন মোশারফ বিশ্বাস সেই পথ ধরে যাচ্ছিলেন তখনই তাকে ধরে জনসম্মুখে চাঁদার টাকার জন্য মারধর শুরু করে জাহাঙ্গীর সহ তার সঙ্গীয়রা। এসময় তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে মোশারফ বিশ্বাস জানান, বেপরোয়া চাঁদাবাজ জাহাঙ্গীর আলমের ভয়ে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে তার। পুরো পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। যদি টাকা না দেয়া হয় গুম করে ফেলার নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

অপর দিকে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য : গত ২৩ নভেম্বর (২০২৫) বাকেরগঞ্জ উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাসকে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ড ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কৃষকদলের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সাংগঠনিক নির্দেশনা অমান্য এবং নীতিভ্রষ্ট কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে আসে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে তাকে অব্যাহতি দেয়।


নিজস্ব প্রতিবেদক :

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় বরিশালে দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) জুম্মার নামাজ শেষে নগরীর চাঁদমারী জামে মসজিদে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এতে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারসহ বিএনপি, অঙ্গসংগঠন এবং সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা–কর্মী উপস্থিত ছিলেন। দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন সাধারণ মুসল্লিরাও।

এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নগরীর বিভিন্ন মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপাসনালয়েও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ প্রার্থনা করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৭ নভেম্বর  বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশাল কর্তৃক বরিশালের কোতোয়ালি থানাধীন চরমোনাই আনন্দ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

 

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক আজ শুক্রবার সকালে এ তথ্য জানান।

 

অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় সন্দেহজনক একটি লাইটার ভেসেল তল্লাশি করে প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের  ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন  চোরাইকৃত কয়লাসহ ১২ জন চোরাকারবারিকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোংলা হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে অসদুপায় অবলম্বন করে এসব কয়লা অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।

 

জব্দকৃত কয়লা, পাচারকাজে ব্যবহৃত লাইটার ভেসেল ও আটককৃত চোরাকারবারীদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বরিশালের কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়।

 

তিনি আরও বলেন, চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বরিশালের নগর উন্নয়ন, পরিকল্পনা ও অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আনতে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BDA)’ গঠনের গেজেট প্রকাশ করেছে। বুধবার প্রকাশিত ২০২৫ সালের গেজেট অ‌ধ্যাদেশ নং ৬৮/২০২৫–এ বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আইনগত কাঠামো, ক্ষমতা ও দায়িত্ব চূড়ান্তভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে বরিশাল এখন রাজধানী, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর মতো নিজস্ব উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় এলো। দীর্ঘ তিন দশকের দাবি এবং বরিশালের নাগরিক উন্নয়ন–সংক্রান্ত নানা উদ্যোগের পর অবশেষে এই সিদ্ধান্ত বাস্তব রূপ পেল।

সরকারি নথি অনুযায়ী, নতুন গঠিত বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ শহরের পরিকল্পিত নগরায়ন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজ উন্নয়ন, ভবন নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ, সড়ক সম্প্রসারণ, পরিবেশ–পরিকল্পনা, আবাসন ব্যবস্থাপনা এবং দীর্ঘমেয়াদি নগর উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরিশাল এক উপকূলীয় জেলা হওয়ায় জলাবদ্ধতা, নদীভাঙন, অনিয়ন্ত্রিত ভবন নির্মাণ ও সমন্বয়হীন অবকাঠামো—এসব সমস্যা সমাধানে একটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়োজন ছিল। গেজেট প্রকাশের ফলে এখন এসব পরিকল্পনা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি হলো।

সরকারি সূত্র জানায়, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কার্যকর হলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন–সংলগ্ন ইউনিয়নগুলোসহ বিস্তৃত এলাকায় মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী উন্নয়ন কাজ হবে। এতে নগর উন্নয়ন হবে দ্রুত, স্বচ্ছ এবং একীভূত কাঠামোয়।

স্থানীয় নাগরিক ও ব্যবসায়ী মহল গেজেট প্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আশা করছে, বরিশালের দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, জলাবদ্ধতা, ভাঙন ও রাস্তার সংকট দূর হবে।

গেজেট প্রকাশের পর এখন প্রশাসনিক নিয়োগ, জনবল কাঠামো ও কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বরিশালবাসীর মতে এটি বরিশালের নগর উন্নয়নে নতুন যুগের সূচনা।

নাহিদ বিন রফিক :
বিনাধান-২৬’র মাঠ দিবস আজ বরিশাল সদর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শিকদার।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএই বরিশাল জেলার উপপরিচালক মোসাম্মৎ মরিয়ম, বরিশালের জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার (অ.দা.) শিশির কুমার বড়াল, বরিশাল সদরের উপজেলা কৃষি অফিসার উত্তম ভৌমিক এবং আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার শেখ হাবিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. ছয়েমা খাতুন। বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের সঞ্চালনায় কৃষক মাহবুবুল আলম অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। মাঠ দিবসে অর্ধশতাধিক কৃষক অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কৃষকের উদ্দেশ্যে বলেন, উচ্চ ফলনশীল জাত হিসেবে আপনাদের বিনাধান-২৬’র প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে, যাতে অন্য কৃষকরা দেখে এ জাত সম্পর্কে জানতে পারে। চিকন চাল হিসেবে এই জাতটি সারাদেশে জনপ্রিয়। এটি আগাম ও স্বল্প জীবনকালীন। এর গাছের উচ্চতা কম এবং শক্ত। তাই বাতাসে হেলে পড়ে না। রোগ সহনশীল। তাই দক্ষিণাঞ্চলে এ জাতটি আমন মৌসুমের জন্য বেশ উপযোগী।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বরিশাল-৪ (হিজলা–মেহেন্দিগঞ্জ–কাজীরহাট) আসনকে ঘিরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উত্তাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। তরুণ ভোটারদের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী রাজিব আহসান ব্যাপক সাড়া ফেললেও প্রবীণ ভোটাররা ঝুঁকছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মাওলানা আব্দুল জব্বারের দিকে। ফলে আসনটিতে গড়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএনপির অভ্যন্তরে দলীয় বিভাজন, গ্রুপিং এবং কোন্দলের কারণে ধানের শীষের প্রার্থী কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। তবে তরুণ নেতৃত্বের কারণে রাজিব আহসান মাঠের নেতাকর্মীদের নিয়ে এ বিভাজন কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে শক্ত সাংগঠনিক ভিত্তি গড়ে তুলেছে। হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জের একাধিক ইউনিয়নে অতীতের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার ইতিহাস তাদের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে। স্থানীয় ভোটারদের মতে, আব্দুল জব্বার বহু বছর ধরে এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখেছেন এবং শিক্ষক–শিক্ষার্থী থেকে কৃষক–শ্রমিক সবার সমস্যার খোঁজ নিয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে আসছেন। ফলে তাকে অনেকে “শক্ত প্রার্থী” হিসেবেই দেখছেন।

এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ এছাহাক মো. আবুল খায়ের মাঠে শক্ত ভোটব্যাংক থাকলেও এখনো উল্লেখযোগ্য প্রচারণা শুরু করেননি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, ইসলামী আন্দোলন যদি জোটবদ্ধ হয়ে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীকে সমর্থন জানায়, তাহলে এ আসনের ভোটের সমীকরণ পুরোপুরি বদলে যেতে পারে।

একাধিক ইসলামী আন্দোলন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হলে ইসলামী জোট সহজেই বিজয়ী হতে পারে।

যদিও কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে জোট বা সমর্থন নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি, তবে রাজনৈতিক মাঠে আলোচনা চলছেসময়ই চূড়ান্ত চিত্র স্পষ্ট করবে।

এদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রাজিব আহসান দিন-রাত মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। গণসংযোগ, পথসভা ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তিনি তরুণ ও নতুন ভোটারদের টার্গেট করে সমর্থন ঘরে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সব মিলিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৪ আসনটি এখন পুরো জেলার সবচেয়ে আলোচিত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনে পরিণত হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বরিশালে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ফেব্রুয়ারি প্রথম দিকে নির্বাচন হবে। এটা আমাদের সর্টটার্ম প্রজেক্ট। সরকার ও এ দেশের মানুষ চেষ্টা করবে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ইনক্লুসিভ একটা নির্বাচন দেয়ার জন্য। কেন্দ্র পাহারা দেওয়া ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়ার দায়িত্ব সকলের। আর এর জন্য সরকার আপনাদের পাশে থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশালের চরমোনাই দরবারে তিন দিনব্যাপী অগ্রাহয়নের মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে উলামা, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, সবাই কেন্দ্রে থাকবেন, যার ভোট নিজের ইচ্ছায় তাকে দিবেন। কেউ যেনো ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে না পারে। এবিষয়ে সরকার শতভাগ প্রস্তুত থাকবে তার ‘ল’ এবং এজেন্সি নিয়ে। কিন্তু আপনাদেরও পাশে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা অপেক্ষা করছি আগামী দিন একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। নির্বাচনের পরে আমরা আমাদের পুরানো ঠিকানায় ফিরে যাবো। যারা সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীর সরকার গঠন করবে তারা অন্তবর্তীকালীন সরকারের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবেন। পাশাপাশি জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা তারা পুরণ করবেন।

তিনি বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল ২০ মিলিয়ন ডলার। আমরা এখন তা ৩২ এর ওপর নিয়ে গেছি। ১৫-১৬ মাসে ১৬ বছরের জঞ্জাল পরিস্কার করা সম্ভব নয়। আগে থেকে একটা কাঠামো তৈরি হয়ে আছে। এই কাঠামোর ভেতরে আমাদের চলতে হয়। আমরা অনেক কিছু পেরেছি, অনেকটা আবার পারিনি। যেটা পারিনি সেটা আগামী দিনের সরকার করবে।

উপদেষ্টা বলেন, আলেমদের মেহনত ব্যর্থ হয়নি, আগামীতেও ব্যর্থ হবে না। ধর্মকে ব্যঙ্ক করে, কটূক্তি করে, ধর্মের অপব্যক্ষা করে জনগণের সেন্টিমেন্টকে উস্কে দেওয়ার ক্ষমতা কারো নাই। ইসলাম সম্পর্কে যদি কেউ কথা বলতে চায় সেটা আলেম ওলামাদের ঐক্যমত্য হতে হবে। না হলে সংঘাত অনিবার্জ হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, আমরা আইন হাতে তুলে নিবো না। আগামী দিনে যদি অন্য কোনো সরকার ক্ষমতায় আসে সেই সময় যদি আইন হাতে তুলে নেন তাহলে সহিংসতা বেড়ে যাবে। ‘ল’ থাকবে না, আইন থাকবে না। ধর্মের নামে কেউ অপব্যক্ষা করলে বা বিশৃঙ্খলা করলে তাদের কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। যারা এগুলো করছে তাদেরকে ধরে আমরা আইনের আওতায় আনছি।

তিনি আরো বলেন, একটা সুযোগ এসেছে ৫৪ বছর পরে হাতে হাত ধরার। সুযোগ বার বার আসে না, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই দেশে আমরা যদি খোলাফায় আর্শেকেদিন দিনের আদলে একটা আদর্শিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই তাহলে একে অপরের হাত ধরে হবে। একের সাথে একের টান থাকতে হবে। টান যদি শেষ হয়ে যায় সেই দিন আমাদের পতন ঘটবে।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সহ আরো অনেকে।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
পটুয়াখালীর কুয়াকাটার মহিপুর থানা এলাকার ডালভুগঞ্জ ইউনিয়নের মনসাতলী গ্রামে প্রতিষ্ঠিত আবু বকর আইডিয়াল স্কুল শিক্ষার মানোন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। শৃঙ্খলা ও অগ্রগতি এই মূলমন্ত্র ধারণ করে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রুত আস্থা অর্জন করেছে।

প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর মোঃ মাহবুবুর রহমান (শাহীন) বলেন,গ্রামীণ এলাকার শিশুরাও যেন শহরের মানসম্পন্ন শিক্ষা লাভ করতে পারে এই স্বপ্ন থেকেই আবু বকর আইডিয়াল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের লক্ষ্য শুধু বইয়ের জ্ঞান নয় নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলা।
বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন। শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠন, শৃঙ্খলা, ইংরেজি চর্চা, আইসিটি জ্ঞান ও সৃজনশীল দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন,
এ অঞ্চলটি যোগাযোগ ও শিক্ষায় অনেক অবহেলিত। ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীরা যাহাতে শিক্ষার সুযোগ পায় সেজন্য আমরা বিশেষভাবে নজর দিচ্ছি।শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও শেখার আগ্রহ বাড়াতে আমরা আনন্দঘন পরিবেশে ক্লাস পরিচালনা করছি। লক্ষ্য হলো প্রতিটি শিক্ষার্থীকে আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

এদিকে বিদ্যালয়ে সন্তানদের ভর্তি করে সন্তুষ্ট স্থানীয় অভিভাবক মিলকান হাওলাদার
জানান,নিকটবর্তী এলাকায় এমন একটি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব ছিল। আবু বকর আইডিয়াল স্কুল প্রতিষ্ঠার ফলে সেই শূন্যতা পূরণ হয়েছে।

স্থানীয় অভিভাবক শাহজালাল বলেন, স্কুলের পরিবেশ, শিক্ষকবৃন্দের আন্তরিকতা ও নিয়মিত পাঠদান সবকিছু মিলিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হাতে আছে বলে মনে করি।
এলাকার কৃতি সন্তান পর্যটন ব্যবসায়ী রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, অত্র এলাকাবাসীর জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আশপাশে অন্তত তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। বিদ্যালয়টি শিক্ষা ক্ষেত্রে খুব ভালো ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের সাথে যারা সম্পৃক্ত আছেন তারা সবাই শিক্ষিত ও মার্জিত ও অত্যান্ত বিনয়ী। আমরা আশা করছি আগামী দিনে এই প্রতিষ্ঠানটি অত্র এলাকা শিক্ষার আলো জালিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

বিদ্যালয় সভাপতি  আঃ লতিফ মিয়া
জানায়, ভবিষ্যতে নতুন একাডেমিক ভবন, বিজ্ঞান ল্যাব, আইসিটি ল্যাব, লাইব্রেরি ও খেলাধুলার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল কার্যক্রম আরও সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
মনসাতলীসহ পুরো মহিপুর অঞ্চলের শিক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে বিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এমনটাই আশা করছেন অভিভাবক, শিক্ষক ও স্থানীয়রা।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার নগরীর সার্কিট হাউজের সম্মেলনকক্ষে “মামলা পরিচালনায় সহায়ক আইন-কানুন, এসএফ লেখার কৌশল এবং করণীয়” শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা। তিনি ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন সম্পর্কে সঠিক ধারণা অত্যন্ত জরুরি। কোন দাবি বৈধ বা অবৈধ—তা বোঝার জন্য আইনের জ্ঞান অপরিহার্য। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আইন জানলে যেকোন পরিস্থিতিতে দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আইনি জটিলতা এড়িয়ে চলার প্রবণতা এখনো অনেক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান, যা পরিত্যাজ্য। সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হলে তা অবহেলা করা যাবে না; এতে প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারেরও সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়।

তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের পক্ষে সব আইনের ধারা মুখস্থ রাখা সম্ভব নয়। তবে প্রয়োজনের সময় কোন বইয়ের কোন ধারায় তথ্য পাওয়া যাবে—এ বিষয়ে ধারণা থাকা জরুরি। আইন সময়নির্ভর; সঠিক সময়ে সঠিক ধারা উল্লেখ করতে না পারলে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তাই আইনের জ্ঞান আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে এবং জনগণের কাছে রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করে।

প্রশিক্ষণে সভাপতিত্ব করেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম সুমন। বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।