নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বরিশালে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকালে বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল সংলগ্ন বিএনপি কার্যালয়ে এ দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপি এ দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করেন। এ সময় নেতারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করেন।

দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল সদর আসনে বিএনপির প্রার্থী মজিবুর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এবায়েদুল হক চান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার, জেলা বিএনপির ‌আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীন প্রমুখ।

দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীর উপস্থিত ছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশাল নগরীতে শহীদ মিনার সংলগ্ন মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের জমিতে ‘জালিয়াত চক্রের’ ঘর উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে।

রোববার বিকালে শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন মোহামেডান ক্লাবের সদস্য, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ক্লাব রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক এবায়েদুলক হক চাঁন। বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম ফরিদ, দেওয়ান আব্দুর রশিদ নিলু, আসাদুজ্জামান খসরু।

বরিশালে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের জমিতে ঘর তোলার প্রতিবাদ
বক্তারা বলেন, একটি মহল ধর্মকে ব্যবহার করে জায়গাটি দখলের চেষ্টা করছে। বরিশাল নগরীর একটি ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ক্লাব। পুরনো ক্লাব বরিশাল ক্রীড়া অঙ্গনে ভূমিকা রেখেছে। একটি মহল ধর্মকে ব্যবহার করে জায়গাটি দখলের চেষ্টা করছে।

খবর ডেস্ক :
বাড়ির পাশে পুকুরে ভাসছে গজার মাছ। এক একটির ওজন ৪-৫ কেজি। তবু ধরেন না কেউ। তার থেকেও আশ্চর্যের বিষয় হলো- বন্যার পানিতে তলিয়ে গেলেও পুকুর ছেড়ে যায় না গজারগুলো।

সকাল হলেই খাবার খেতে তীরে আসে গজার মাছ। যা দেখতে পুকুর পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন দূর-দূরান্তের মানুষ। অনেকে মনোবাসনা পূরণে নিয়ত করে পুকুরে গজার মাছকে খাবার দিচ্ছেন।

অদ্ভুত এমন গজার মাছের সন্ধান মিলেছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের উত্তর ধামুরা গ্রামের বাসিন্দা সান্টু হাওলাদারের বাড়ির পুকুরে।

স্থানীয়দের দাবি- পুকুর দখল করে রাখা গজার মাছ কেউ ধরতে গেলেও শারীরিক বা মানসিকসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তিনি। তাই মারা গেলে রান্না না করে মাটি চাপা দেওয়া হয় রহস্যময় এই গজার মাছ।

সান্টু হাওলাদারের স্ত্রী খাদিজা বেগম জানিয়েছেন, তার স্বামী সন্টু হাওলাদার দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। দেশে ফিরে কীটনাশকের ডিলারের ব্যবসা করতেন। হঠাৎ এক রাতে স্বপ্নে দেখেন, পুকুর ঘাটে গজার মাছের ঝাঁক। তার দাবি- হযরত শাহজালাল (রা.) এর মাজারে গজার মাছ অলৌকিকভাবে এসেছে তাদের পুকুরে। যা সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে গিয়ে মিলিয়েও দেখেছেন তারা।

তিনি বলেন, “পুকুরে থাকা গজার মাছগুলোর বয়স ১৫-২০ বছর হবে। এগুলোর কিছু বিশেষ দিক রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে যখন চারদিক তলিয়ে যায় তখনও পুকুর ছেড়ে যায় না। আবার পুকুরের অন্য মাছও খায় না তারা। সকাল হলেই খাবার খেতে ঘাটে আসে। গজারগুলোকে প্রতিদিন সকালে ছোট মাছ খেতে দেওয়া হয়। আর মারা গেলে মাটি চাপা দেওয়া হয়।”

খাদিজা বেগম বলেন, “প্রথম দিকে আমাদের এক আত্মীয় অবহেলা করে গজার ধরতে এসেছিল। এজন্য সে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকেই গজার মাছের আধ্যাত্মিক শক্তির কথা বিশ্বাস করতে শুরু করে গ্রামবাসী। তবে ১০ শতকের এই পুকুরটিতে বর্তমানে কি পরিমাণ গজার মাছ রয়েছে তা জানা নেই কারোর।”

গজার মাছ ঘিরে এমন অলৌকিক ঘটনা স্বীকার করছেন প্রতিবেশীরাও। তবে গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বাড়ির মালিক সান্টু হাওলাদার। অথচ পুকুরে গজার মাছ ঘিরে নিজের ব্যবসা পরিবর্তন করেছেন তিনি। এখন জিন ছাড়ানো, তাবিজ-কবজ এবং তদবির দিয়ে থাকেন সান্টু হাওলাদার। এ কারণে “সান্টু ফকির” নামে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।

সন্টু হাওলাদারের পুকুরে গজার নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভ্রান্ত ধারনা সৃষ্টি হয়েছে তা সম্পূর্ণ কুসংস্কার বলে মন্তব্য করেছেন উজিরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রসেন মজুমদার।

তিনি বলেন, “দেশে বিলুপ্ত প্রজাতির যে ৬৪টি দেশীয় মাছ রয়েছে তার মধ্যে একটি গজার মাছ। মা এবং পুরুষ গজার পোনা ১০ সেন্টিমিটার না হওয়া পর্যন্ত ছেড়ে যায় না। অথচ এই মাছকে অনেকে অমঙ্গলের প্রতীক হিসেবেও দেখে থাকে। তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
সূত্র : দেশকাল নিউজ ডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশাল মহানগর শ্রমিক দলের উদ্যোগে ওজোপাডিকোতে আউটসোর্সিং বন্ধ করে স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এর আগে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

স্মারকলিপি প্রদানকালে বরিশাল মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. ফয়েজ আহমেদ খান বলেন, গত ১৭ বছর ধরে ওজোপাডিকোতে স্থায়ী কারিগরি জনবল নিয়োগ করা হয়নি। এর ফলে ২১ জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বহুলাংশে বহিরাগত নির্ভর হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃত্রিমভাবে জনবল সংকট সৃষ্টি করে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি)-এর পরিপন্থি।

পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, গ্রাহকসেবার মান উন্নয়ন এবং ওয়েস্ট জোনকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার লক্ষ্যে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া বন্ধ করে স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করা হচ্ছে।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা:

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় আহত একটি নাইট হেরন (নিশি বক) উদ্ধার করে প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করেছে উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন (উপরা)।

 

শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আলিপুর মৎস্য বন্দরের একটি মুরগির দোকান থেকে অসুস্থ অবস্থায় আটকে রাখা পাখিটিকে উদ্ধার করা হয়।

 

উপরা’র সদস্যরা রাত বকটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক পরিচর্যা ও চিকিৎসা শেষে সন্ধ্যায় কুয়াকাটা ইলিশ পার্ক–ইকো রিসোর্ট এলাকার নিরাপদ পরিবেশে অবমুক্ত করেন।

 

উদ্ধার ও অবমুক্তকরণ কাজে উপস্থিত ছিলেন উপরার আহ্বায়ক কে এম বাচ্চু, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার, টোয়াকের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম এবং বন বিভাগের গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন,বন্যপ্রাণী প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে যাতে কোনো পাখি বা প্রাণী অবৈধভাবে আটক বা নির্যাতনের শিকার না হয়। কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সবসময় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।

 

উপরার আহ্বায়ক কে এম বাচ্চু বলেন,উপকূলীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। জনসচেতনতা বাড়লে এ ধরনের উদ্ধার কার্যক্রম আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সম্ভব। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।

 

গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন,

রাত বকসহ সব ধরনের বন্যপ্রাণী বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে সুরক্ষিত। কোনো প্রাণী আটক, বিক্রি বা নির্যাতন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা এ ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন অপরাধ না ঘটে সে বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানো হবে।

 

বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা একে এম মনিরুজ্জামান বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এ ধরনের পাখি আটক, বিক্রি বা শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে। কোথাও বন্যপ্রাণী আটক থাকতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগকে জানানোর অনুরোধ করছি।

 

উপার সদস্যরা জানান, রাত বক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি পাখি। সফলভাবে উদ্ধার ও অবমুক্ত করতে পারায় স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

খবর ডেস্ক : 

পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের প্রথম বয়া ছাড়িয়ে প্রায় ৭০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে ঘটল এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। লাইটার জাহাজের ডেকে লাফিয়ে উঠল তিন মণ রুপালি ইলিশ। শনিবার (২৯ নভেম্বর) গভীর সমুদ্রে এ আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে।

 

কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ এমভি কেএসএল গ্লাডিয়েটরের নাবিকরা জানান, এমন ঘটনা আগে কখনোই দেখা যায়নি।

 

এ ঘটনার ১০ সেকেন্ডের একটি বিস্ময়কর দৃশ্য ধারণ করে রাখেন জাহাজের প্রকৌশলী রবিউল হোসেন।

 

রবিউল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহাজটি পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটির দিকে এগোচ্ছিল। ঠিক সেই সময় সাগরের বুক ফুঁড়ে জাহাজের দুই পাশ বেয়ে ছোট ইলিশের দল ছুটে আসে। ভয় আর উত্তেজনার মিশেলে লাফাতে লাফাতে তারা ডেকে উঠতে থাকে।

 

মুহূর্তেই প্রায় তিন মণ মতো ইলিশ উঠে আসে জাহাজের ওপর। নাবিকরা যতটা পেরেছেন কুড়িয়ে নিয়েছেন, বাকিগুলো আবার সাগরে পড়ে যায়।

এমন অদ্ভুত ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রাজীব সরকার। তিনি বলেন, বড় শিকারি মাছের তাড়া, জাহাজের আলো ও শব্দ মিলেই এরকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

 

তার ভাষায়, সমুদ্রে টুনা বা ম্যাকারেলের মতো বড় শিকারি মাছ ছোট ইলিশের পালের পেছনে তাড়া করলে আতঙ্কিত হয়ে ইলিশরা জাহাজের আলো বা শব্দের দিকেই ছুটে আসে। জাহাজের গা ঘেঁষে পানি সরু হয়ে গেলে মাছগুলো ওপরের দিকে ঠেলে উঠে যায়, তখন লাফাতে লাফাতে ডেকে পড়া অস্বাভাবিক নয়।

 

তিনি আরো জানান, জাহাজের তলার নেভিগেশন লাইট, ইঞ্জিনের কম্পন ও প্রপেলারের শব্দ অনেক সময় ছোট মাছকে আকর্ষণ করে কিংবা বিভ্রান্ত করে। ফলে তারা দল বেঁধে জাহাজের খুব কাছে চলে আসে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

লাখো মানুষের তওবা, ইস্তেগফার ও রোনাজারিতে আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হলো ঐতিহাসিক চরমোনাই মাদরাসা ময়দানে আয়োজিত ৩দিনব্যাপী অগ্রহায়ণের মাহফিল।

গত ২৬ নভেম্বর’২৫ বুধবার বাদ জোহর আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই’র উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়ে আজ ২৯ নভেম্বর ‘২৫ শনিবার সকাল ৯.০০ টায় সমাপনী অধিবেশন ও আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় লক্ষ লক্ষ মুসল্লীদের আধ্যাত্মিক এ মিলনমেলা।

পীর সাহেব চরমোনাই আখেরী মোনাজাতে বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের জন্য দোয়া করেন এবং চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মামলাবাজদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহর দোয়া করেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নিপিড়ীত মানুষের জন্য দোয়া করেন।

সমাপনী বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দুনিয়ার মোহ-ই সকল পাপের উৎস। ব্যক্তি জীবনে আর্থিক অনিয়ম থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের যত দুর্নীতি, ফ্যাসিবাদ যা কিছু ঘটে তার কারণও এই দুনিয়ার মোহ। অথচ দুনিয়া খুবই তুচ্ছ একটা জিনিস। হায়াত শেষ হলে পৃথিবীর কোন সম্পদ কারো কাজে লাগে না। তাই দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করতে হবে।

সমাপনী অধিবেশনের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মানুষ আজ আল্লাহকে ভুলে নাফরমানি করছে অহরহ। অথচ একজন মানুষ কবরে গিয়ে মাফ না পাওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিকৃষ্ট পশুর মত মনে করতে হবে। সুতরাং তাক্বওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই ঐ মানুষ এমনকি আলেম, মুফতী ও পীরের কোন মূল্য নেই। তিনি বলেন নিজেকে নিজে ছোট মনে করতে হবে। আমিত্ব ভাব ও তাকাব্বুরী পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসা বিদ্বেষ পরিত্যাগ করতে হবে। ঘোড়ার মুখে যেভাবে লাগাম থাকে সেভাবে রাগের মুখে লাগাম লাগাতে হবে। সকাল-সন্ধ্যা জিকিরের মাধ্যমে ক্বলব পরিশুদ্ধ করতে হবে। গীবতের মতো গুনাহ থেকে বাচিয়া থাকতে হবে। পরিবারের সবাইকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে দ্বীনের পাবন্দি করতে হবে। পরিবারে খাছ পর্দা জারি করতে হবে। সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য হতে বাচিয়া থাকতে হবে। আলস্নাহওয়ালাদের কিতাব পড়তে হবে। সাপ্তাহিক হালকায়ে জিকির ও তালীমে নিয়মিত অংশ নিতে হবে। ছহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে।

সমাপনী অধিবেশনের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই মাহফিল বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত সবার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। আখেরী মুনাজাতে অংশ নেয়া প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মোবারকবাদ জানান তিনি।

আখেরী বয়ানের পর পীর সাহেব চরমোনাই বিভিন্ন লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেন। এসময় তিনি মুরিদানদের সঠিক পথে পরিচালিত হবার বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। অতঃপর তিনি তাওবা করিয়ে গুনাহ থেকে বাচিয়া থাকার শপথ করান।

আখেরী মুনাজাতে পীর সাহেব চরমোনাই ফিলিস্তিন, ভারত, কাশ্মীর, মিয়ানমার, সিরিয়া সহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করেন।

এবছর মাহফিলে মূল ৭টি বয়ানের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন দেশের বিশিষ্ট ওলামায়ে কিরাম।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’ নতুন অভিযাত্রায় মাত্র ২০ যাত্রী নিয়ে প্রথমবারের মতো বরিশাল পৌঁছেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্টিমারটি নগরীর ত্রিশ গোডাউন জেটিতে ভিড়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. জসীম উদ্দীন জানান, সকালে ঢাকা সদরঘাট থেকে ৪১ যাত্রী নিয়ে স্টিমারটি যাত্রা শুরু করলেও চাঁদপুরে নেমে গেলে যাত্রী সংখ্যা কমে ২০–এ দাঁড়ায়। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ফিরতি যাত্রা করবে।

ঘাটে পৌঁছালে যাত্রীদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আহসান হাবীব ও জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন।

প্রথম যাত্রার যাত্রী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এটা শুধু যাত্রা নয়, অনুভূতি। স্টিমারের সঙ্গে আমাদের শিকড়ের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। নদীপ্রেমীদের জন্য এ অভিজ্ঞতা অনন্য।”

তিনি পর্যটন বিকাশে বরিশালের ঐতিহ্য, দর্শনীয় স্থান ও খাবারের ব্র্যান্ডিং করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আহসান হাবীব বলেন, “পদ্মা সেতুর পর নৌপথের জনপ্রিয়তা কমলেও ‘পিএস মাহসুদ’ আবার নদীপথে ভ্রমণের রোমাঞ্চ ফিরিয়ে আনবে। পর্যটনশিল্পেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।”

বিআইডব্লিউটিসির মেরিন অফিসার মো. হানিফ জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা স্টিমারটিকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। আগের তুলনায় গতি ও সুবিধা—দুটোই বেড়েছে। এখন ঘণ্টায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে।

নতুন সূচনা ও নিয়মিত সময়সূচি
কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতি শুক্রবার স্টিমারটি ঢাকা থেকে বরিশাল এবং শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকায় চলাচল করবে। সপ্তাহের অন্যান্য দিন স্টিমারটি নৌবিহারের জন্য ভাড়া দেওয়া হবে।

প্রথম শ্রেণির দ্বৈত শয্যা: ২,২৬০ টাকা (ভ্যাট ৩৩০ টাকা); দ্বিতীয় শ্রেণি: ১,৬৫০ টাকা, সুলভ শ্রেণি: ৬০০ টাকা

শতবর্ষী ‘পিএস মাহসুদ’: সময়ের সাক্ষী

১৯২৮ সালে কলকাতার গার্ডেন রিচ ওয়ার্কশপে নির্মিত এ স্টিমারটি ব্রিটিশ আমল থেকে দেশভাগ, পাকিস্তান-পিরিয়ড ও স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সাক্ষী।
১৯৮৩ সালে স্টিম ইঞ্জিন বদলে ডিজেল ইঞ্জিন বসানো হয় এবং ২০২২ সালে চলাচল বন্ধ হওয়ার পর ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নবায়ন করা হয়।

অতীতের গৌরব, নদীর সৌন্দর্য আর ভ্রমণরসিকদের আগ্রহ নিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করল ‘পিএস মাহসুদ’।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
কুয়াকাটার স্থানীয় জনসাধারণের জন্য শুক্রবার (২৮ নভেম্বর ) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কুয়াকাটার হোটেল আল হেরা প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা, পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হবে।

ক্যাম্পে চক্ষু সেবা দেবেন দুইজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ইমতিয়াজ আহামেদ অন্তর
এমবিবিএস (ঢাকা), ডি.এম.ইউ, পি.জি.টি (চক্ষু) প্রাক্তন আর.এম.ও, ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল, ফার্মগেট ও ডা. শিহাব শাহরিয়ার খান এমবিবিএস (ঢাকা) মেডিকেল অফিসার, পটুয়াখালী চক্ষু হাসপাতাল।

আল হেরা ফাউন্ডেশন কুয়াকাটার চেয়ারম্যান মাওলানা মাইনুল ইসলাম মান্নান বলেন,চোখ আমাদের জীবনের অন্যতম মূল্যবান সম্পদ। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে অনেকেই নিয়মিত চোখের চিকিৎসা নিতে পারেন না। তাদের কথা ভেবেই আমরা এই ফ্রি ক্যাম্পের আয়োজন করেছি। কুয়াকাটার মানুষের জন্য মানবিক সেবামূলক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

ডা. ইমতিয়াজ আহামেদ অন্তর বলেন, মানবসেবাই চিকিৎসার মূল লক্ষ্য। আধুনিক মেডিকেল প্রযুক্তির কারণে এখন চোখের অধিকাংশ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। এই ক্যাম্পে রোগীরা সঠিক পরামর্শের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে তাৎক্ষণিক দিকনির্দেশনা পাবেন।

ডা. শিহাব শাহরিয়ার খান বলেন,গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষ চোখের সাধারণ সমস্যাকে গুরুত্ব দেন না। এতে ছোট সমস্যা থেকেই বড় জটিলতা তৈরি হয়। এই ক্যাম্পে প্রাথমিক পরীক্ষা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিকল্পনা এবং চোখের যত্নে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।

ক্যাম্পে আগত রোগীদের জন্য কম খরচে ফ্যাকো অপারেশনসহ সব ধরনের চক্ষু অপারেশন করার সুযোগ থাকবে।

বিশেষত যারা সানি অপারেশন করতে চান, তাদের অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) সঙ্গে আনতে হবে।

আল হেরা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই মানবিক সেবা কার্যক্রম কুয়াকাটার সাধারণ মানুষের চোখের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
দেশের একমাত্র সূর্য উদয় সূর্য অস্তের দর্শনীয় সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার পর্যটন খাতে যুক্ত হলো আরেকটি আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন আবাসিক হোটেল‘হোটেল রয়েল গ্যালাক্সি’। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে রাখাইন মার্কেট রোডে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় হোটেলটির। উদ্বোধনের পর থেকেই এটি পর্যটন ব্যবসায়ী এবং ভ্রমণপ্রেমীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পর্যটন ব্যবসায়ী, গণমাধ্যমকর্মী এবং সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, তবে মানসম্মত আবাসনের সংখ্যা তুলনামূলক কম। নতুন হোটেলের উদ্বোধন পর্যটকদের সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

হোটেল রয়েল গ্যালাক্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম শিকদার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, পর্যটকদের নিরাপদ, আরামদায়ক ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন আবাসন প্রদানই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনগন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা সেবার মান বজায় রেখে নিরলস কাজ করে যাবো।

তিনি আরও বলেন,পরিবার, দম্পতি, গ্রুপ ট্যুর এবং অফিসিয়াল ট্যুরসব ধরনের অতিথির কথা বিবেচনা করেই আমরা রুম ক্যাটাগরি ও সেবার ব্যবস্থা করেছি। অতিথিদের সন্তুষ্টিই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক)-এর সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন,কুয়াকাটায় পর্যটক বাড়ছে, কিন্তু মানসম্পন্ন হোটেলের ঘাটতি ছিল। রয়েল গ্যালাক্সির মতো আধুনিক হোটেল চালু হওয়ায় পর্যটন খাত আরও শক্তিশালী হবে।

হোটেল ডিরেক্টর আনোয়ার হোসেন জানান, অতিথিদের নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা, আরাম ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ট্যুর গাইড, ট্রান্সপোর্ট সাপোর্টসহ অতিথিদের জন্য থাকছে বাড়তি নানা সুবিধা।