নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, “যারা বাংলাদেশের পরিবেশ অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে—তাদের জায়গা বাংলার মাটিতে হবে না।

তিনি আরও বলেন, “আমরা এই দেশকে মুক্ত করার জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছি। ফ্যাসিবাদ থেকে দেশকে মুক্ত করেছি। চাঁদাবাজি দেখার জন্য রাস্তায় নামিনি, কিংবা মানুষ খুন হওয়ার দৃশ্য দেখার জন্য নেমিনি।”

মঙ্গলবার বরিশাল নগরীর ঐতিহাসিক বেলস পার্ক মাঠে সমমনা আট দলের বিভাগীয় সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

চরমোনাই পীর বলেন, “আপনারা বহু শাসন দেখেছেন। এবার ইসলামকে সুযোগ দিন। আমরা একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র উপহার দেব। ইসলামপন্থিরা ক্ষমতায় গেলে চাঁদাবাজি থাকবে না, অবিচার থাকবে না, খুনাখুনি থাকবে না এবং দেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে না।

ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা বিভিন্ন সময়ে মুখরোচক কথার মাধ্যমে ধোঁকা দিয়ে ক্ষমতায় বসে হাজার হাজার মায়ের বুক খালি করেছে, যারা দেশের টাকা পাচার করেছে এবং বারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে—তাদের জায়গা বাংলার মাটিতে হবে না।

সমাবেশস্থলে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা জড়ো হন। দুপুরে বেলস পার্ক চত্বরে সমাবেশের পুরো এলাকা ভরে ওঠে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেছেন, “আমরা আট দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আল্লাহতায়ালা কোরআনে দুটি দলের কথা বলেছেন—হিজবুল্লাহ ও হিজবুশ শয়তান। আমরা আল্লাহর দলে থাকতে চাই। আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কোরআনের আইন চালু করি।”
মঙ্গলবার বরিশাল নগরীর ঐতিহাসিক বেলস পার্ক মাঠে সমমনা আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনের পূর্বে গণভোটসহ পাঁচ দফা’ দাবিতে আন্দোলনরত আট দলের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা মানবরচিত আইনের সংবিধান দেখতে চাই না। মদিনার ইসলাম কায়েম করতে চাই। সংস্কারের মাধ্যমে সংবিধান থেকে ইসলামবিরোধী ধারা বাতিল করতে চাই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “একটি দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে; কিন্তু যারা তাদের সহযোগিতা করেছে—তাদেরকেও নিষিদ্ধ করা উচিত।”
চরমোনাই পীর সম্পর্কে তিনি বলেন, “ছাত্রজীবনে পীর পছন্দ করতাম না। কিন্তু আজ তার পাশে বসে মনে হলো—তিনি শুধু পীর নন, এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার মহাবীর।”

আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী সমমনা আট দলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশের প্রধান অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, “যারা বাংলাদেশের পরিবেশ অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে—তাদের জায়গা বাংলার মাটিতে হবে না।
তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে আমরা রাজপথে নেমেছি। চাঁদাবাজি দেখার জন্য নয়, মানুষ হত্যার ঘটনা দেখার জন্য নয়। আমাদের সুযোগ দিন—আমরা শান্তি, ন্যায় ও সমৃদ্ধির ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র গড়ে দেব। তখন চাঁদাবাজি থাকবে না, অবিচার থাকবে না, খুনাখুনি থাকবে না, দেশের টাকা বিদেশেও পাচার হবে না।”

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যারা মুখরোচক কথায় ধোঁকা দিয়ে ক্ষমতায় বসে হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে—তাদের জায়গা বাংলার মাটিতে হবে না।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন—ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, সহকারী মহাসচিব সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ, খেলাফত মজলিসের আমির আব্দুল বাসির আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দিন, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, নেজামে ইসলাম পার্টির আমির সরওয়ার কামাল আজিজী, খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন ও মহাসচিব নিজামুল হক নাঈম।

দুপুর ১২টার দিকে সমাবেশ শুরু হলেও বেলা ১১টা থেকেই বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সড়ক ও নৌপথে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। বেলস পার্ক মাঠ ও আশপাশের এলাকা নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ভরে ওঠে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দুটি ছাগল সদকা করেছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার।

মঙ্গলবার সকালে বরিশাল নগরীর রুপাতলী দারুল সুন্নাহ কওমী মাদ্রাসার এতিম শিশুদের মাঝে সদকা হিসেবে ছাগল দুটি বিতরণ করেন তিনি। এ সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

দোয়া মাহফিলে মহানগর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর সুস্থতার জন্য শুধু আমি নয়, সারাদেশের মানুষ দোয়া করছে। আল্লাহ যেন তাঁকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন।”

অনুষ্ঠানে নেতারা দেশনেত্রীর সুস্থতা, দীর্ঘায়ু ও দেশের কল্যাণ কামনা করেন।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় কুয়াকাটায় বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুয়াকাটা পৌর বিএনপির উদ্যোগে পৌর বিএনপির কার্যালয়ে দোয়া ও মোনাজাতের এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ মুসল্লীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি জসিম উদ্দিন বাবলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ঘরামী, সহসভাপতি শাজাহান আকন, যুবদল নেতা আবু হানিফ গাজী, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলী হায়দার শেখ, শ্রমিক দলের সভাপতি মানিক ফকির, কৃষক দলের আহ্বায়ক আলী হোসেন খন্দকার, ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুবায়ের আহম্মেদ রিয়াজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল শেখ ও ছাত্রদলের সদস্য সচিব নেছার উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের একজন গণমানুষের নেতা। তার শারীরিক সুস্থতা দেশের মানুষ প্রত্যাশা করে। তিনি যেন দ্রুত আরোগ্য লাভ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে আবারও ভূমিকা রাখতে পারেন এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

সভাপতি আব্দুল আজিজ মুসল্লী বলেন,বেগম খালেদা জিয়া দেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আমরা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করেছি।

পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মতিউর রহমান বলেন,জাতির প্রিয় নেত্রী আজ অসুস্থ। তার সুস্থতা কামনায় আমরা সবাই একসঙ্গে দোয়া করেছি এবং সব মানুষের কাছে দোয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

দোয়া পরিচালনা করেন কুয়াকাটা কেন্দ্রীয় বাইতুল আরজ জামে মসজিদের ইমাম আলহাজ্ব কারি মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
অন্যের মাধ্যমে প্রক্সি দিয়ে ‘অফিস সহায়ক’ পদে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন রবিউল ইসলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে চাকরিতে যোগদান করতে এসে ধরা পড়লেন তিনি।

সোমবার বিকালে বরিশাল জেলা পরিষদে এই ঘটনা ঘটে। প্রতারণা করে চাকরি পাওয়া রবিউল ইসলামকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

রবিউল পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) আহসান হাবিব এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ১৫ নভেম্বর বরিশাল জেলা পরিষদে অফিস সহায়কের দুটি পদে লিখিত নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। সেই পরীক্ষায় অন্য লোক দিয়ে প্রক্সি দেওয়ান রবিউল ইসলাম। পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত ভাইয়া পরীক্ষায় একইভাবে অন্য লোক দিয়ে প্রক্সি দেওয়ান তিনি। দুই পরীক্ষায় প্রথম হন তিনি।

তিনি জানান, সোমবার নিয়োগপত্র নিতে জেলা পরিষদে আসেন রবিউল। এসময় তার আচরণ, পরীক্ষার ফলাফল এবং পরীক্ষার সনদসহ কাগজপত্র দেখে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টিতে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায় জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে চাকরি নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

প্রশাসক বলেন, বিকাল ৫টার দিকে রবিউল ইসলামকে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

রবিউল নিজের অপরাধ স্বীকার করে লিখিত স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আহসান হাবিব।

তিনি বলেন, রবিউল জালিয়াতি করে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিল। এখন যারা অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন- তাদের মধ্যে থেকে একজনকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা এখন শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নয়, বরং দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রত্যাশার প্রতীক।

শনিবার রাজধানীর মেট্রো লাউঞ্জে ‘২৪ জুলাই যোদ্ধা আন্দোলন’-এর উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বেগম জিয়া ভোটাধিকার, মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং নারী নেতৃত্ব বিকাশে অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই বেগম জিয়া দীর্ঘদিন ধরে সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁকে বাহ্যিকভাবে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেলেও বাস্তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা নাজুক বলে মন্তব্য করেন তিনি। রহমাতুল্লাহ বলেন, “বিভিন্ন মামলার মাধ্যমে তাঁকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা হয়েছে; কিন্তু গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার আজও অটুট।”

বক্তব্যে তিনি স্মরণ করেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর নেতৃত্বশূন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বেগম জিয়ার দৃঢ় ভূমিকার কথা। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৯১ সালের নির্বাচন ও পরবর্তী নানা রাজনৈতিক সংকটে তাঁর নেতৃত্ব দেশের গণতন্ত্রচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বলে উল্লেখ করেন রহমাতুল্লাহ।

তিনি বলেন, “দেশের গণতন্ত্রচর্চার যে মূল্যবোধ-চেতনাকে মানুষ ধারণ করে, তার সঙ্গে বেগম জিয়ার নেতৃত্ব গভীরভাবে যুক্ত। তাই তাঁর সুস্থতা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের সঙ্গেও সম্পৃক্ত।”

দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ‘২৪ জুলাই যোদ্ধা আন্দোলন’-এর আহ্বায়ক মো. রেজাউল কবির রেজা। উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সহ-সভাপতি ডা. শহীদুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মশিউর রহমান মাসুদ, ব্যবসায়ী সহিদুজ্জামান, শেরেবাংলা নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজালাল, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় নেতা শামীম, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুম বিল্লা, রাশেদ খানসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মী।

শাহিন সুমন :
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বরিশালের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থী ঘোষণা করে কার্যত জেলায় শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করেছে বিএনপি। কৌশলগত কারণে বরিশাল-৩ আসনটি এখনও খালি রেখেছে দলটি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন ছয়টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। ফলে পুরো জেলায় বিএনপি–জামায়াত–ইসলামী আন্দোলনকে ঘিরে ত্রিমুখী ভোটযুদ্ধ গরম হয়ে উঠছে।

 

বরিশাল-১: ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপির দুর্গ
আগৈলঝাড়া–গৌরনদী নিয়ে গঠিত বরিশাল-১ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট নেতা জহিরউদ্দিন স্বপন ইতোমধ্যেই ভোটারদের আস্থা অর্জন করেছেন। মাঠের চিত্র বলছে, এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বপন ও জামায়াতের এ কে এম কামরুল ইসলাম খানের মধ্যে। ভোটারদের সোজাসাপ্টা মত বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে বিএনপি।

 

বরিশাল-২: সান্টুর এগিয়ে থাকার আভাস, অভির আগমনে সমীকরণ বদলাতে পারে
উজিরপুর–বানারীপাড়া আসনে বিএনপির এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গোলাম ফারুক অভি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। জামায়াতের প্রার্থী আবদুল মান্নান মাঠে খুব একটা সক্রিয় নন।

 

বরিশাল-৩: কৌশলগত নীরবতা, সুবিধাজনক অবস্থানে জামায়াত
বাবুগঞ্জ–মুলাদী নিয়ে গঠিত বরিশাল-৩ আসনে বিএনপি এখনও প্রার্থী দেয়নি। স্থায়ী কমিটির দুই নেতা সেলিমা রহমান ও জয়নুল আবেদীনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সমীকরণকে কেন্দ্র করে সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে। এদিকে জানা গেছে, এই আসনটি এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদকে সমর্থন দেওয়ার কথাও ভাবছে বিএনপি।
প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় বর্তমানে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে জামায়াতের জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর। তবে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ দাবি করছেন, “এ আসন ধানের শীষের ঘাঁটি। বিএনপি প্রার্থী এলেই জয়ের সম্ভাবনা শতভাগ।

 

বরিশাল-৪: রাজিব–জব্বার লড়াই তুঙ্গে
হিজলা–মেহেন্দিগঞ্জ আসনে বিএনপির রাজিব আহসান ও জামায়াতের আবদুল জব্বারের মধ্যে সরাসরি লড়াই জমে উঠেছে। রাজিব আহসান সংগঠনগতভাবে এগিয়ে থাকলেও মাঠে প্রচারণায় কিছুটা এগিয়ে জামায়াত প্রার্থী।

 

বরিশাল-৫: সরোয়ার বনাম হেলাল—দুই হেভিওয়েটের মোকাবিলা
বরিশাল সদর–সিটি করপোরেশনভিত্তিক এ আসনটি বিএনপির দীর্ঘদিনের শক্ত ঘাঁটি। পাঁচবারের সাবেক এমপি মজিবর রহমান সরোয়ারকে ঘিরে আস্থাশীল বিএনপি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত নেতা মুয়াযযম হোসাইন হেলালও শক্তিশালী প্রার্থীদের একজন, ফলে এ আসনে
উত্তেজনা রয়েছে তুঙ্গে।

 

বরিশাল-৬: লড়াই তিনভাগে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা
বাকেরগঞ্জে বিএনপির আবুল হোসেন খানের বিপরীতে মাঠে আছেন জামায়াতের মাহমুদুন্নবী তালুকদার। পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতা মুফতি সাইয়্যেদ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমও প্রার্থী হলে ভোটের মাঠ তিনভাগে ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজের সহকারী অধ্যাপক, দৈনিক সমকালের কুয়াকাটা প্রতিনিধি ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সদস্য প্রয়াত খান এ রাজ্জাকের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১ডিসেম্বর) আছর নামাজ বাদ এ দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব কুদ্দুস মাহমুদ এর সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান,কুয়াকাটা পৌর জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ও মহিপুর থানা ইমাম সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা মাইনুল ইসলাম মান্নান প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত প্রেসক্লাব সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু,টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কাজী সাইদ, কুয়াকাটা পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, খান এ রাজ্জাক ছিলেন কুয়াকাটার সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সত্য, ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছেন। শিক্ষকতা থেকে শুরু করে সাংবাদিকতা সব ক্ষেত্রেই তিনি রেখে গেছেন সততার দৃষ্টান্ত। তাঁর মৃত্যু কুয়াকাটার সংবাদপত্র অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন,খান এ রাজ্জাক ছিলেন আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁর লেখনি, তাঁর মূল্যবোধ আজও আমাদের পথ দেখায়।

প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন,তাঁর মতো মানবিক ও দায়িত্বশীল সাংবাদিক পাওয়া সত্যিই কঠিন। নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের জন্য তিনি আদর্শ হয়ে থাকবেন।

সভা শেষে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন কুয়াকাটা কেন্দ্রীয় বাইতুল আরজ জামে মসজিদের ইমাম আলহাজ্ব কারি মোঃ নজরুল ইসলাম।

পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে প্রয়াত সাংবাদিকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সকল সদস্য, স্থানীয় সাংবাদিক, শিক্ষক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে গাঁজা সেবনের অভিযোগে চার যুবককে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বেঙ্গল গেস্ট হাউজের পেছনে তালুকদার বাড়ির সামনে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মোঃ নাসির বিশ্বাস (২০) মো. শাহীন খান (২০)মো. রাকিবুল ইসলাম (২০) মো. রফিকুল ইসলাম (২১)।

অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াসিন সাদেক।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসিন সাদেক বলেন,মাদক আমাদের সমাজ ও তরুণ প্রজন্মের জন্য বিপজ্জনক। কুয়াকাটাকে মাদকমুক্ত ও নিরাপদ পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। নিয়ম ভেঙে কেউই পার পাবে না। মাদক সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসময় অভিযানে সহযোগিতা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের চৌকস টিম।

স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের ধারাবাহিক মাদকবিরোধী অভিযান কুয়াকাটায় অপরাধ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তারা আরও বলেন, পর্যটন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে এমন কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকলে তরুণ সমাজ মাদক থেকে দূরে থাকবে এবং কুয়াকাটার ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো চালু হলো ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) পরীক্ষা। মৃগীসহ বিভিন্ন স্নায়বিক রোগ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই পরীক্ষা এখন থেকে কম খরচে পাওয়া যাবে হাসপাতালটিতে।

আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে হাসপাতালের ২য় তলার ২০৩৭ নং কক্ষে ইইজি সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বিনামূল্যে ইইজি মেশিন সরবরাহ করা হয় শেবাচিম হাসপাতালে। মেশিনটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে দক্ষতা অর্জনের জন্য গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নেন নিউরোমেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ও দুইজন মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিউরোমেডিসিন ও স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী এম. মনিরুল ইসলাম বলেন, “ইইজি পরীক্ষা মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মৃগী, ঘুমের ব্যাধি, টিউমার, স্ট্রোকসহ বিভিন্ন স্নায়বিক রোগ শনাক্তে অত্যন্ত কার্যকর। সরকারি হাসপাতালে এই পরীক্ষা মাত্র ৬০০ টাকায় হওয়ায় দরিদ্র রোগীরা বিশেষ উপকার পাবেন।”

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, “আমাদের হাসপাতালে ইইজি মেশিনের অভাব ছিল। আমরা নতুন করে কিনতে উদ্যোগ নিলেও তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন বিনামূল্যে মেশিন সরবরাহ করায় আমরা কৃতজ্ঞ। এতে দক্ষিণাঞ্চলের অসহায় রোগীরা উন্নত সেবা পাবেন।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মাহমুদ হাসান, সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথোলজিস্ট ডা. আশিক দত্ত প্রমুখ।