বরগুনা:
বেতাগী উপজেলার ৫ ইউনিয়নে যুবলীগের কমিটি অনুমোদন নিয়ে সংগঠনে বিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে।

শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় অর্থ বাণিজ্য করে হোসনাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি দেওয়ার প্রতিবাদে বরগুনা-বেতাগী আঞ্চলিক সড়কের সোনার বাংলা এলাকায় তুলকালাম করেছেন পদবঞ্চিতরা।

সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একাংশের নেতাকর্মীরা।
গত শুক্রবার বেতাগী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি প্রভাষক জহিরুল ইসলাম লিটন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান জুয়েল রানা স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে এ সব কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। গত বছরের মার্চ মাসে এসব ইউনিয়ন যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সদ্য ঘোষিত হোসনাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি বিলুপ্তির দাবিতে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দলের বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম সজিবসহ অন্যান্যরা বক্তব্য দেন।

বক্তারা টাকার বিনিময় বিএনপির লোক দিয়ে সদ্য ঘোষিত ইউনিয়ন যুবলীগের গঠিত কমিটি বাতিলের দাবি করেন। সন্ধ্যায় তা প্রত্যাহার করলেও আগামীতেও কমিটি বাতিলের দাবিতে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা।

উপজেলা যুবলীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫ ইউনিয়নে যুবলীগের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা হলেন- বিবিচিনি ইউনিয়নে সৈয়দ নজরুল ইসলাম আজাদ ও মো. আবুল কালাম আজাদ, হোসনাবাদ ইউনিয়নে মো. সিদ্দিকুর রহমান ও মো. সফিকুল ইসলাম, মোকামিয়া ইউনিয়নে মো. দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার ও মো. রিয়াজুল ইসলাম, বুড়ামজুমদার ইউনিয়নে মো. সহিদুল ইসলাম নাসির ও মহিদুজ্জামান রণ এবং কাজিরাবাদ ইউনিয়নে এইচ.এম সজিব ও মো. তারেকুজ্জামান তারেক।

অভিযোগ অস্বীকার করে বেতাগী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম লিটন বলেন, ইউনিয়ন ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলার ৫ ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বরিশালের খবর ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের দেশের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। মাত্র ১৫ বছরে আমরা এই যে উন্নতি করতে পারলাম, পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’

আজ রবিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০২১-২২ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নিচ্ছি এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিচ্ছি। ২০১০ সাল থেকে ২১ সাল পর্যন্ত যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছিলাম, যে লক্ষ্য স্থির করেছিলাম, এটা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন।

এরপর ২৯ বছর এদেশের মানুষের জীবনে কোনো উন্নতি হয়নি, পরিবর্তন ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের দেশের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, ‌আমাদের দেশ বিশ্বের ৩৩ তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হয়েছে। আশা করছি, আরও এগোতে পারব।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশালের পাইকার বাজারে একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে কাঁচামরিচসহ বেশ কিছু সবজির দাম। এর ফলে এরই মধ্যে প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারে।

বিক্রেতারা বলছে, প্রবল বৃষ্টির কারণে দেশের কৃষকরা পণ্য বাজারে নিয়ে আসতে না পারায় এবং শুক্রবার ও শনিবার ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে দুই একদিনের মধ্যে বাজার দর আবার আগের জায়গাতে চলে আসবে।

বরিশাল শহরের একমাত্র বৃহৎ কাঁচাপণ্যের পাইকার বাজার ‘সিটি মার্কেট’ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার যেখানে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি প্রতি দর ছিলা কাঁচা মরিচের সেখানে শনিবার কেজিপ্রতি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়।

এছাড়া একদিনের ব্যবধানে শনিবার ২৫ থেকে ৩০ টাকার পটল কেজিপ্রতি ৪৫-৫০ টাকা, ৩৫ থেকে ৪০ টাকার শসা কেজিপ্রতি ৪৫-৫০ টাকা, ১২০ থেকে ১৫০ টাকার গাজর কেজিপ্রতি ১৫০-১৮০ টাকা, ৪৫ টাকার লাউ ৫০-৬০ টাকা, ৩০ টাকার ঝিঙা কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ টাকা, ৪০ টাকার বরবটি কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, ৮০ থেকে ৩০ টাকার করলা কেজিপ্রতি ৯০ টাকা, ৭০ থেকে ৮০ টাকার বেগুন কেজিপ্রতি ৯০ টাকা, ৩৫ থেকে ৪০ টাকার পোটল কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে এ বাজারে। তবে মিষ্টি কুমড়া অপরিবর্তিত ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

পাইকার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম শুভ জানান, মেহেরপুর, চুয়াডাঙা, কুষ্টিয়া, যশোর ও ঈশ্বরদীতে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষকরা মাঠ থেকে সবজি উত্তোলন করতে পারেনি, তাই বাজারে চাহিদার থেকে সবজি আমদানি কম হয়েছে। আবার শুক্র ও শনিবার ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় মরিচও আমদানি হয়নি। আর এ কারণে পাইকার বাজারে মরিচসহ কিছু সবজির দর বেড়েছে।

তবে দুই একদিনের মধ্যে কাঁচা পণ্যের বাজারে দর আবার স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন সিটি মার্কেটের পাইকার ব্যবসায়ী দুলাল বাণিজ্যালয়ের প্রোপাইটর সিরাজুল ইসলাম দুলাল।

তিনি জানান, মোকাম থেকে ব্যবসায়ীরা সবজি কিনে পাঠান পাইকার বাজারে। আর তারা যে দরে বিক্রি করতে বলেন চালান দেখে সেই দরেই বিক্রি হয়ে থাকে সিটি মার্কেটে। এখানে পাইকার বাজারের ব্যবসায়ীদের দর নিয়ন্ত্রণে কোন হাত থাকে না।

এদিকে পাইকার বাজারে দর বেশি হওয়ার প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারে। নগরের বাংলাবাজার থেকে সবজি কিনে ক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহের থেকে এ সপ্তাহে সব সবজির দামই কেজি প্রতি ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে মরিচের দর বেড়েছে অনেক বেশি। আজ কাঁচা মরিচ কিনলাম ৪০০ টাকা কেজি দরে।

এ বিষয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকার বাজারে দর বেড়ে গেলে তাদের কিছু করার থাকে না। আর মরিচসহ অন্যান্য সবজি যাদের কাছে গতকালের কেনা ছিল তারা ৪০০ টাকা দরে মরিচ বিক্রি করছেন, আর আজ যারা এনেছেন তাদের আরও কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সূত্র : বাংলানিউজ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতিও অব্যাহত রয়েছে।

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার (০৮ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এ কর্মবিরতি শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা, ক্লাস, একাডেমিক সব কার্যক্রম বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

যতদিন পর্যন্ত তাদের দাবি আদায় না হবে, ততদিন পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়লেও দাবি পূরণ হলে তারা তা পুষিয়ে নেবেন ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন বরিশাল বিশ্বিবিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপ‌তি ড. আবদুল বাতেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বরিশাল মহানগর বিএনপির ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেছে কেন্দ্র। সিনিয়ল যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিক্ষপ্তিতে এই কমিটি ঘোষনা করা হয়। মোঃ মনিরুজ্জামান খান ফারুক কে আহবায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে জিয়া উদ্দিন সিকদার কে এবং এক নং যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে সাবেক ছাত্রনেত্রী আফরোজা খানম নাসরিকে।

এ উপলক্ষে আজ সোমবার বিকেলে নগরীর সদর রোডের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে নতুন আহবায়ক কমিটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিন, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার ও আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক।

এর পরপরই সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া মোনাজাত এবং বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে শুভেচ্ছা আনন্দ র‌্যালি করে নবগঠিত মহানগর বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

র‌্যালিটি নগরীর প্রধানপ্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে পূনরায় দলীয় কার্যালয় এসে শেষ হয়।

এর পূর্বে বরিশাল মহানগর বিএনপি আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিদার ও মনিরুজ্জামান খান ফারুককে নেতা কর্মীরা শুভেচ্ছা জানিয়ে দলীয় কার্যলয়ে নিয়ে আসেন।

সেখানে আহবায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার ও যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিনকে দলীয় অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা জানাতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের অসুস্থার কারনে সেই ফুলের শুভেচ্ছা গ্রহন করেননি।

এছাড়া আনন্দ ও শুভেচ্ছা র‌্যালি করার জন্য দুপুরের পর থেকে মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বিএনপি,শ্রমিকদল,মহিলাদল,যুবদল,ছাত্রদল সহ অঙ্গ সহযাগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্লাকার্ড বহন করে মিছিল সহকারে দলীয় কার্যলয় আসে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে বরিশাল নগরীতে চলাচলকারী ব্যাটারি চালিত অবৈধ ইজিবাইক ও রিকশা। সুষ্ঠু তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এ অবৈধ যানের সংখ্যা একের পর এক বেড়েই চলছে। সেই সাথে বাড়ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা এবং বিদ্যুৎ অপচয়ের পরিমাণ।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল সিটি এলাকায় চলাচল করছে ১৫ হাজারের অধিক ব্যাটারি চালিত রিকশা। সেই চলাচল করছে আরও ৫ হাজারের অধিক থ্রি-হুইলার।
যদিও অবৈধ ইজিবাইকের সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বরিশাল সিটি করপোরেশন এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কাছে।

এমনকি অবৈধ যান নিয়ন্ত্রণের বিষয়েও তেমন দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে। বরং নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব একদপ্তর চাপানোর চেষ্টা করছে অন্য দপ্তরের ওপর।

তবে বিআরটিএ বলছে, ‘আয়োতনের তুলনায় নগরীতে চলাচলকারী অবৈধ ইজিবাইক এবং ব্যাটারির রিকশার সংখ্যাই বেশি। এসব অবৈধ ইজিবাইক বা ব্যাটারির রিকশা বন্ধে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করেন সংস্থাটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর রূপাতলী বাস্ট্যান্ড থেকে লঞ্চঘাট, নথুল্লাবাদবাদ থেকে রূপাতলী এবং লঞ্চঘাট, জেলখানার মোড় থেকে নথুল্লাবাদ ও বেলতলা, লঞ্চঘাট থেকে বেলতলা, চৌমাথা থেকে নবগ্রাম, বটতলা এবং শেবাচিম হাসপাতাল রুটে চলাচল করছে অসংখ্য ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক এবং রিকশা। এর বাইরে নগরীর অভ্যন্তরীণ রুটেও চলাচল করছে এসব অবৈধ যান।

সরেজমিনে নগরীর হাসপাতাল রোড এবং বান্দ রোডের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দেখা যায়, প্রতি মিনিটে ২০-২৫টির অধিক ইজিবাইক এবং থ্রি-হুইলার বা সিএনজি চলাচল করছে। এর ফলে প্রতিটি সড়কেই লেগে থাকছে দীর্ঘ যানজট।

আবার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্যেও নগরীর সীমান্তবর্তী গড়িয়ারপার থেকে নলছিটি জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে ইজিবাইক এবং থ্রি-হুইলার। ফলে প্রায়শই আসছে দুর্ঘটনার হতাহতের খবর। তাছাড়া এসব যানের ভাড়াও নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে দাবি যাত্রীদের। যাত্রীদের জিম্মি করে যে যার মতো করে আদায় করছে ভাড়া। এখন বৈধ বা অবৈধ, যেকোন যানে উঠলেই ১০ টাকার নিচে ভাড়া নেই।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘ইজিবাইকের নিয়ন্ত্রণ সিটি করপোরেশনের হাতে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তারা এ বিষয়ে জোড়ালো কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আবার বাম রাজনৈতিক সংগঠনের আন্দোলনের চাপে অবৈধ ইজিবাইক এবং ব্যাটারি চালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না ট্রাফিক বিভাগ। সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে ইজিবাইক চালক এবং মালিকরা। একেরপর এক সড়কে নামছে অনুমোদনহীন ইজিবাইক এবং রিকশা।

এমনকি সিটির বাইরে বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলার ইজিবাইক, ব্যাটারির রিকশা এবং থ্রি-হুইলার এসে চলাচল করছে নগরীতে। ফলে দিন অথবা রাত, সব সময় যানজট লেগে থাকছে সদর রোড, নথুল্লাবাদ, নতুন বাজার, রূপাতলী, সাগরদী, হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা, বটতলা চৌমাথা এবং লঞ্চঘাট সড়কে।
অপরদিকে, শহরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে চলাচালকারী ইজিবাইক এবং রিকশা থেকে অবৈধ বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে। যাদের ছত্রছায়ায় ওইসব রুটে চলাচল করছে অবৈধ ইজিবাইক।
ইজিবাইক প্রসঙ্গে বিআরটিএ বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘ইজিবাইক বা ব্যাটারিচালিত রিকশা অবৈধ। অবৈধ এ যানের সংখ্যা এতোটাই বেড়েছে যে শহরের ধারণ ক্ষমতার থেকে বেশি হয়ে গেছে। এগুলোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি।

নগরীতে অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে বরিশাল সিটি মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিআরটিএ’র এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তবে আমরা অবৈধ যানের বিকল্প হিসেবে বৈধ যানের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। এতে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা কমে যাবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রুনা লায়লা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা সিটি করপোরেশনের সাথে বসেছিলাম। অবৈধ যানবাহনের বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়েছে। যেগুলো বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ নেয়ার কথা। উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে ট্রাফিক বিভাগের এই কর্মকর্তা প্রশ্নটি সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘অবৈধ ইজিবাইক এবং রিকশার বিরুদ্ধে আমাদের আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেনের বক্তব্য জানতে অফিসিয়াল নম্বরে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ফোন রিসিভ করেননি জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমের। তবে সিটি করপোরেশনের যানবাহন শাখার পরিদর্শক আতিকুর রহমান মানিক বলেন, ‘নগরীতে কী সংখ্যক ইজিবাইক বা ব্যাটারির রিকশা চলছে সেই হিসাব আমাদের কাছে নেই। এটা ট্রাফিক বিভাগের কাছে থাকবে। তবে দুই হাজার ৬১০টি হলুদ ইজিবাকের ব্লু-বুক এবং টোকেন দিয়েছে সিটি করপোরেশন। এর বাইরে চলাচলকারী সব ইজিবাইক অবৈধ।

তিনি বলেন, ‘অবৈধ এসব ইজিবাইক বন্ধের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত মাসে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে সিটি করপোরেশন থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা বলা সম্ভব না।

এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ‘একটি ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও রিকশায় পাঁচটি করে ১২ ভোল্টের ব্যাটারি থাকে। ১২ ভোল্টের পাঁচ ব্যাটারির ধারণক্ষমতা ২ কিলোওয়াট। দিনে পাঁচটি ব্যাটারির একটি ইজিবাইক আট ঘণ্টা চার্জ দিলে খরচ হয় ১৪-১৫ ইউনিট বিদ্যুৎ। সে হিসেবে বরিশাল নগরীতে বর্তমানে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যয় হচ্ছে ইজিবাইক চার্জে। তাই এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি এখন সচেতন মহলের।

 

বৃষ্টিতে ভিজে, গান গেয়ে ও স্লোগান দিয়েই কোটা বাতিলের দাবিতে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। এ সময় অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৃষ্টিতে ভিজে, গান গেয়ে ও স্লোগান দিয়েই কোটা বাতিলের দাবিতে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে আন্দোলনস্থলের দু’পাশে ফাঁকা মহাসড়কে ফুটবল খেলায় মগ্ন হন শিক্ষার্থীরা। সড়কের দু’পাশে যানবাহনের জটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। এ সময় অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দেন।

রোববার (৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রথমে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে বিক্ষোভ করা হয়। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সময় এক শিক্ষার্থীকে কাফনের কাপড় পড়ে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানান, আন্দোলন শুরুর ঘণ্টাখানেক পরে মুষলধারে বৃষ্টি নামলে, সেই বৃষ্টিতে ভিজেই আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। আর মুষলধারে বৃষ্টির মাঝে কয়েক দল শিক্ষার্থী সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফুটবল খেলায় মগ্ন হন। খেলার ফাঁকে ফাঁকে তাদেরও কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে এবং সব চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। তাদের দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলন নিতে বাধ্য হবেন তারা।

এদিকে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে সড়কের দু’পাশে যানবাহনের জটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। এ সময় অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দেন। তবে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবার যানবাহন চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটাতে দেখা যায়নি শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফারিয়া সুলতানা লিজা বলেন, ২০১৮ সালে আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছিলাম অথচ তা আবার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকবো। আমাদের কোটার প্রয়োজন নেই। কোটা আমাদের দেশের মেধাকে শূন্য করে দিচ্ছে। এটা শুধু আমাদের দাবি না, পুরো দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীর দাবি। তাই শিগগিরই কোটা বাতিল করা হোক।

এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ আর মুকুল বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময় সজাগ আছে। যানবাহন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি যাতে তারা দ্রুত রাস্তা ছেড়ে দেয়।
সূত্র : বাংলানিউজ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নিজেদের মধ্যে মারামারি করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা বিরোধী আন্দোলন পন্ড করেছে ছাত্রলীগ।

আজ বিকাল ৫ টায় আন্দোলন চলাকালে দপদপিয়া সেতুর দক্ষিণ ঢালে মোটরসাইকেল ধাক্কা দেয়ার অভিযোগ এনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়।

এসময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের অন্যান্য কর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অবরোধ করে রাখা যানবাহন ছেড়ে দেয়। এসময় ভিডিও করতে গেলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সদস্য ও বরিশাল পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আবু উবায়দাকে মারধর করে এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তার ভিডিও ফুটেজ ডিলিট করে ফোন ফিরিয়ে দেয়।

তবে এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাস চলাচল চালুর প্রতিবাদ জানায় এবং পুনরায় অবরোধের চেষ্টা চালায়। কিন্তু তা আর সফল হয় না। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এবিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কোনা মন্তব্য করতে রাজী হননি।

ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবী করেন গাড়িতে ধাক্কা দেয়ায় সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে সংঘর্ষ ঘটেছে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান মুকুল জনান, শিক্ষার্থীদের নিজেদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিলো। তবে কেউ কোনো অভিযোগ করে নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।