নিজস্ব প্রতিবেদক :

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১৫টি অসহায় পরিবারের জন্য নতুন ঘর ও ছাগল উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরিশাল জেলা আমীর এবং বরিশাল–৪ (মেহেন্দিগঞ্জ–হিজলা–কাজীরহাট) আসনে দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল জব্বার।

উত্তর ও দক্ষিণ উলানিয়া ইউনিয়নের ৪টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছিল। বিষয়টি জানার পর তাদের বসবাসের উপযোগী ঘর নির্মাণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইকরা ফাউন্ডেশনকে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানান মাওলানা জব্বার। পরে সংস্থাটি নতুন ঘর নির্মাণ করে দেয়। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে এসব ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ও হস্তান্তর করেন তিনি।

এছাড়া আত্মকর্মসংস্থান ও স্বাবলম্বীকরণের লক্ষ্যে উলানিয়া উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের ১১টি অসহায় পরিবারের হাতে ইকরা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২২টি ছাগল তুলে দেন তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, “মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই আমাদের এসব উদ্যোগ। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় অসহায় পরিবারকে ঘর এবং দরিদ্র ভাই–বোনদের ছাগল উপহার দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। যাদের ঘর দিয়েছি, তাদের মধ্যে একটি হিন্দু পরিবারও রয়েছে—মানবসেবা আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”

অনুষ্ঠানে জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও আগামী উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম. সাইফুর রহমান, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা শহিদুল ইসলাম, ঢাকাস্থ উলানিয়া আদর্শ সমাজ পরিষদের সভাপতি ও দক্ষিণ উলানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোজাম্মেল হক তালুকদার, উত্তর উলানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাস্টার আমজাদ হোসেন, ইউনিয়ন আমীরগণসহ ইকরা ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উপহার বিতরণ শেষে উপকারভোগী পরিবারগুলো মাওলানা আবদুল জব্বারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
১০ বছরের বায়েজিদ হঠাৎ নিজ বাড়িতে বাম পায়ে আঘাত লেগে গোড়ালি ভেঙ্গে অসুস্থ হয়ে পরে। দিনমজুর বাবা কোনোমতে চিকিৎসা করালেও পুরোপুরি সুস্থ না হয়ে উল্টো ইনফেকশন হয়ে হাঁটা বন্ধ হয়ে যায় বায়েজিদের।

বায়েজিদ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা চানমিয়া-শিরিন দম্পতির সন্তান।

ছেলের চিকিৎসার জন্য নিজেদের সবটুকু সম্বল শেষ করে চিকিৎসা করালেও সুস্থ হয়না বায়েজিদ। পরে সুবিধাবঞ্চিত শিশু, তাদের মা এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাজ আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা গুড নেইবারস বাংলাদেশের সহায়তায় চিকিৎসা পেতে শুরু করে বায়েজিদ।

বায়েজিদকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে তাঁর চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহে কনসার্টের আয়োজন করে সংস্থাটি। শুক্রবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুয়াকাটা সৈকতের পর্যটন পার্ক মাঠে কনসার্টে স্থানীয়, পর্যটক এবং সংস্থাটির প্রতিনিধিরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

সকলের সহযোগিতায় প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা অনুদান পায় বায়েজিদ। পরে আরো বিশ হাজার টাকা যোগ করে সংস্থাটি পঞ্চাশ হাজার টাকার তুলে বায়েজিদের মায়ের হাতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদ।

বায়েজিদ মা শিরিন আক্তার জানায়, আমার ছেলে অসুস্থ। সন্তানের অসুস্থতার চেয়ে মায়ের কাছ আর কিছু কষ্টের থাকতে পারে না। তাই আজকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। গুড নেইবারসকে ধন্যবাদ দিয়ে সবার কাছে ছেলের জন্য দোয়া চান তিনি।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদ বলেন, সমাজের এমন অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য গুড নেইবারসকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা সবাই যদি এরকম অসহায়, দুস্তদের পাশে দাঁড়াই তাহলে সকল বায়েজিদরা সুস্থ হয়ে একসময় এদেশকে সুন্দর করে গড়ে তুলবে।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা:

প্রত্যেকটি অবদানই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় আন্তর্জাতিক সেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষে পরিস্কা পরিচ্ছন্নতা অভিযান আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গুড নেইবারস বাংলাদেশ,কলাপাড়া ও তালতলী কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিডিপি) যৌথভাবে দিবসটি পালন করেছে।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে এ পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও আলোচনা করা হয়। এতে অংশ নেন প্রায় ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ উপজেলা প্রশাসন, কুয়াকাটা পৌরসভা, বীচ ব্যবস্থাপনা কমিটি, পর্যটন ও পরিবেশকর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গুড নেইবারস বাংলাদেশ কলাপাড়া সিডিপির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পঙ্কজ বিশ্বাস ও প্রোগ্রাম অফিসার দিনা রিসিলা।

সভাপতিত্ব করেন গুড নেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর বার্টিন গমেজ।

 

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাউছার হামিদ।

 

বিশেষ অতিথি কুয়াকাটা পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমান।

 

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিকুল আলম, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান খান, কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

 

 স্বেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষে কুয়াকাটা সৈকতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়।

কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ফিশ ফ্রাই মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় একটি স্থায়ী ডাস্টবিন এবং ৫টি অপসারণযোগ্য অস্থায়ী ডাস্টবিন উদ্বোধন করা হয়। পরে ডাস্টবিনগুলো কুয়াকাটা পৌরসভা ও বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।

 

এ ছাড়া তরুণ-তরুণীদের সম্মিলিত উদ্যোগে বিভিন্ন স্থান থেকে দান সংগ্রহ করে একজন অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

আলোচনা সভা, জারিগান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল জারিগান, নৃত্য এবং স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাউছার হামিদ বলেন,কুয়াকাটার পর্যটন সম্ভাবনা রক্ষা করতে হলে সৈকতকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবক, পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও স্থানীয় জনগণ একসাথে কাজ করলে টেকসই পরিবর্তন সম্ভব। আজকের তরুণদের অংশগ্রহণ সত্যিই প্রশংসনীয়।

 

কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমান বলেন,সৈকতের পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় ডাস্টবিন স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণে সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনসচেতনতা তৈরি হলে পরিবেশ রক্ষা আরও সহজ হবে।

গুড নেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রধান বার্টিন গমেজ বলেন,স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সক্রিয় অংশগ্রহণই শিশু অধিকার সুরক্ষা ও সমাজ উন্নয়নের মূল শক্তি। আমরা বিশ্বাস করি তরুণদের হাত ধরেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।

 

গুড নেইবারস বাংলাদেশের কার্যক্রম

১৯৯৬ সাল থেকে সংস্থাটি শিশু অধিকার সুরক্ষা, নারী ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও যুব উন্নয়ন নিয়ে কর্মসূচি পরিচালনা করছে। বর্তমানে তারা দেশের ১৩টি জেলায় ১৭টি প্রকল্পের মাধ্যমে কমিউনিটির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

জনতম উপেক্ষা করে চট্রগ্রাম বন্দর বিদেশী কোম্পানীকে ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল হয়েছে।

 

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বরিশাল জেলা ও মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ঐক্য পরিষদ (স্কোপ)।

 

মহানগর শ্রমিক দলের আহবায়ক ফয়েজ আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টি বরিশাল জেলার আহবায়ক একে আজাদ, জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডাক্তার মনিষা চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা।

 

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, দুই বছরের অন্তবর্তীকালীন সরকার ৪৮ বছরের জন্য বন্দরের চুক্তি করছে। এটা কোন শুভ লক্ষন না। এই চুক্তি জনসমাগমে প্রকাশ করা হয়নি, জনগনের মতামত নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। এসময় অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিলেরও দাবি জানান তারা।

 

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে নগরীতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।#

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :
হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আতঙ্ক নদীভাঙন আবারও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মেঘনার চরাঞ্চলে নতুন করে বালুমহাল ইজারা দেওয়ায় তিন ইউনিয়নের মানুষ ও অবকাঠামো চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। সরকারি বরাদ্দে নির্মিত প্রায় ৪২৪ কোটি টাকার রক্ষা বাঁধও হুমকির মুখে।
নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ হলেও গত ৫ আগস্টের পর থেকে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে হিজলার গৌরবদী ইউনিয়ন এবং মেহেন্দীগঞ্জের গবিন্দপুর ও উলানিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হতে থাকায় আগামী বর্ষা মৌসুমেই এসব এলাকার বড় অংশ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

বেআইনিভাবে ইজারার অভিযোগ
বরিশালের সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন ও বিভাগের সাবেক কমিশনার মো. রায়হান কাওছারের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৭টি বালুমহাল ঘোষণা ও ইজারার অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও লিখিত অভিযোগের পরও ইজারা বাতিল হয়নি। অভিযোগ রয়েছে ইজারাকৃত এলাকা ছাড়িয়ে আশপাশের অঞ্চল থেকেও ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে।

স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্থানীয় সমাজসেবক সৈয়দ আকবর আলী চৌধুরী, যিনি রিটকারী বলেন “হাইকোর্টে রিট থাকা অবস্থায় বালুমহাল ইজারা দেওয়া আদালত অবমাননার শামিল। প্রশাসনের দায়িত্ব জনগণকে রক্ষা করা, কিন্তু এখানে উল্টোটা হচ্ছে।
তিনি দাবি করেন, দুই শতাধিক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর গতিপথ বদলে বিপর্যয় নেমে আসছে।

জরিপ ছাড়াই ইজারা
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এবং বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১১, এছাড়া বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩-এর বিধিমালা অনুযায়ী-অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগ জরিপ করে নিশ্চিত করার পরই জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন জমা দেবেন বিভাগীয় কমিশনার দপ্তরে। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব বিবেচনাপূর্বক বিভাগীয় কমিশনার বালুমহাল ঘোষণা করতে পারেন।

বরিশাল জেলায় ১৪৩২ বাংলা সনের মোট ৮টি এলাকায় বালুমল হিসেবে ইজারা দেন জেলা প্রশাসক। সূত্র অনুযায়ী দেখা যায়-২০২৩ সালে একটি মাত্র এলাকার জরিপ করা হয়েছে। বাকি ৭টি এলাকা এখনো জরিপ করা হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

হাইকোর্টের স্থগিতাদেশও মানা হয়নি
গত ১২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে হাইকোর্ট সৈয়দখালী সাওড়া মৌজার বালুমহাল ইজারা স্থগিত করে বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেয়। রুল পাঠানো হয় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।

হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে এখনো বালু উত্তোলন অব্যাহত আছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালুমহাল ইজারা দিয়েছেন সাবেক বরিশাল জেলা প্রশাসক এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার।

বরিশালের মেঘনা নদীর ৩৫ নং সৈয়দ খালী সাওড়া মৌজার ৩৮-৭৮-৩৮৮১ দাগের ১০০ (একশত) একরসহ ৭টি বালুমহাল ঘোষণা দিয়ে ১৪৩২ বাংলা ১৩ই চৈত্র ইজারা প্রদান করেছেন।

বরিশাল কািশপুর গনপাড়া এলাকার আর বি এন্টারপ্রাইজের প্রাে: মো: আবুল বাছেদ সর্বোচ্চ ১৬ কোটি ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দরদাতা হিসেবে ইজারা দিয়েছে জেলা প্রশাসক।

কিন্তু হিজলা উপজেলাধীন মেঘনা নদীর ৩৫ নং সৈয়দ খালী সাওড়া মৌজার ৩৮৭৮-৩৮৮১ দাগের ১০০ (একশত) একর এলাকা নিয়ে হাইকোর্টে দীর্ঘদিন যাবৎ একাধিক রিট মামলা চলমান। মামলার এখনো কোনো সমাধান হয়নি। যে কারণে তৎকালীন জেলা প্রশাসকরাও ইজারা দেননি এই এলাকার বালু মহাল।

ঠিকাদার আবুল বাছেদর মুঠোফোনে বুধবার ৩টা ১১ মিনিটে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেনী।

এ বিষয়ে নবাগত জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম সুমন বলেন “আমি বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড গত ১০ ও ১১ মে অভিযানে ৫৩টি ড্রেজার, ৩৬টি বাল্কহেড, ১ কোটি ১২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ ছয়জনকে আটক করা হয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরিশাল বিভাগের সমন্বয়কারী ও জেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য মো: রফিকুল আলম বলেন, জরিপ না করে বালুমহাল ঘোষণা দেওয়া বড় ধরনের অন্যায়। জরিপ ছাড়া বালুমহাল ইজারা দিলে একদিকে সরকারি আইন অমান্য করা হয়, অন্যদিকে পরিবেশ ও জলাশয় নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ইজারাকৃত এলাকার আশপাশ নদীতে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু এটি বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে কিন্তু সেদিকে প্রশাসন নজর দিচ্ছেনা তাহলে তো হাইকোর্টে কেও তারা অবমাননা করছে। এটা বড় ধরনের অন্যায় ।

সচেতন মহল বলছে, আইন লঙ্ঘন ও হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করায় সংশ্লিষ্ট দুই সাবেক প্রশাসককে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ–মুলাদী) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত হয়েছেন অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন। দলীয় সূত্রে প্রার্থীতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলায় বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের মাঝে উৎসাহ–উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন। তিনি এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে তার নাম ঘোষণার পর থেকে এলাকায় বইছে “খুশির জোয়ার” এমনটাই জানান স্থানীয় নেতা–কর্মীরা।

ঐতিহাসিকভাবে বরিশাল-৩ আসনটি জাতীয় পার্টি এবং ওয়ার্কার্স পার্টির দখলে ছিল বিভিন্ন সময়ে। গত কয়েকটি নির্বাচনে এই দুই দলই প্রভাব বিস্তার করলেও দীর্ঘদিন পর বিএনপি সরাসরি দলীয় প্রার্থী দিল এ বিষয়টিকে সংগঠন পুনরুজ্জীবনের সুযোগ হিসেবে দেখছে স্থানীয় বিএনপি।

বাবুগঞ্জ ও মুলাদীর বিভিন্ন ইউনিয়নে দলীয় নেতা–কর্মীরা জয়নাল আবেদীনের পক্ষে প্রচারণা জোরদার করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তারা মনে করছেন, দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক সম্পৃক্ততা এবং এলাকার সঙ্গে প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নির্বাচনী মাঠে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, “দলের মহাসচিব থেকে শুরু করে সব স্তরের নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং এলাকার উন্নয়নই হবে আমার প্রধান অঙ্গীকার।

এদিকে তার মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বিএনপি–অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরে সভা–সমাবেশ ও মতবিনিময় কর্মসূচি শুরু হয়েছে। নেতা–কর্মীরা বলছেন, দল যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে এই আসনে উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠবে।

বরিশাল-৩ আসনের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করল বিএনপির এই ঘোষণা—এমনই মন্তব্য করছেন স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘বাকসু’ নামের বৈধ মালিকানা একমাত্র বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের এ দাবি তুলে নাম রক্ষায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে কলেজটির শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিএম কলেজ ক্যাম্পাসের ‘বাকসু’ ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কাজী সাইফুল বাসার। তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২তম সিন্ডিকেট সভায় তাদের ছাত্র সংসদের জন্য ‘বাকসু’ নাম অনুমোদনের সিদ্ধান্তকে “অনৈতিক, ঐতিহাসিক সত্য বিকৃতি এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের পরিচয় জবরদখল” বলে উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, একই অঞ্চলের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একই নাম ব্যবহার করলে একাডেমিক বিভ্রান্তি, প্রশাসনিক জটিলতা, গণমাধ্যমে ভুল ব্যাখ্যা এবং ইতিহাস বিকৃত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।

এসময় তারা তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন—
১. বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অবিলম্বে ‘বাকসু’ নাম অনুমোদনের সিদ্ধান্ত বাতিল করবে।
২. বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের জন্য নতুন ও স্বতন্ত্র নাম ঘোষণা করবে।
৩. বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের নাম নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে না—সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় লিখিতভাবে নিশ্চিত করবে।

শিক্ষার্থীরা সতর্ক করে বলেন, ‘বাকসু’ নাম রক্ষায় প্রয়োজনে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
অগ্রহায়নের শুরুর দাপটেই কেঁপে উঠেছে বরিশাল। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে শহরে মৌসুমের সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম তাপমাত্রা ও হালকা মেঘাচ্ছন্ন আকাশে সূর্য লুকোচুরি খেলায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষরা।

এর আগে ৩০ নভেম্বর বরিশালের তাপমাত্রা নেমেছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা ছিল স্বাভাবিক তাপমাত্রার প্রায় ৫ ডিগ্রি নিচে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে নভেম্বরে বরিশালের স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হওয়া উচিত ১৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই তুলনায় বরিশালে শীত অনেকটা আগেভাগেই জেঁকে বসেছে।

আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে—ডিসেম্বরজুড়ে রাতের তাপমাত্রা আরও কমবে। একই সঙ্গে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে এ মাসে ১–২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে তার একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। মাসের মধ্যভাগের পর বরিশালসংলগ্ন পশ্চিম অঞ্চলে ৬–৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনাও রয়েছে।

এদিকে সদ্য সমাপ্ত নভেম্বরে বরিশালে স্বাভাবিকের তুলনায় ৭৩ শতাংশ কম মাত্র ১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যদিও স্বাভাবিক হিসেবে এ মাসে ৬ মিলিমিটারের পরিবর্তে ৫–১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা জানিয়েছিল আবহাওয়া বিভাগ।

শীতের কামড় বাড়লেও কৃষকের মাঠে এখন ব্যস্ততা, অগ্রহায়নের ভোরেই চলছে আমন ধান কর্তনের উৎসব। দক্ষিণাঞ্চলের খরিপ–২ মৌসুমে আবাদ হওয়া প্রায় ৯ লাখ হেক্টর জমি থেকে ২৪ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে মাঠে দিনরাত কাজ করছেন কৃষক ও কৃষিশ্রমিকরা।

একই সঙ্গে রবি মৌসুমকে সামনে রেখে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১৭ লাখ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকরা সর্বোচ্চ ব্যস্ত দিন পার করছেন।

শীতের তীব্রতা জনস্বাস্থ্য ও ফসলের মাঠে কোনো প্রভাব ফেলে কি না—সে দিকেও এখন সবার নজর।

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দশম গ্রেড বাস্তবায়নের এক দফা দাবিতে সারাদেশের মতো বরিশালেও কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বেতন বৈষম্য দূর করার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

দীর্ঘদিন ধরে অযৌক্তিক বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ অংশগ্রহণকারীদের। তাদের দাবি করোনা, ডেঙ্গু, নিপাহসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও ন্যায্য গ্রেড পাচ্ছেন না তারা।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন মেডিকেল ফার্মাসিস্ট মো. সাইফুল ইসলাম লিটন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট তাওহিদুল হাসান, হাসান মাহমুদ, মেডিকেল ফার্মাসিস্ট নাহিদ ইসলাম এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফেরদৌসী।

বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে দশম গ্রেড বাস্তবায়নসহ সব ধরনের বৈষম্য দূর করার দাবি জানান। একই সঙ্গে সতর্ক করে বলেন, দাবি আদায় না হলে তারা সম্পূর্ণ কর্মবিরতি কম্পিলিট শাটডাউন এ যেতে বাধ্য হবেন।

প্রতিবাদকারীরা জানান, স্বাস্থ্যব্যবস্থা সচল রাখতে সরকারকে দ্রুত ন্যায্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশালের সন্ধ্যা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়া দুই কেজি ৬শ গ্রাম ওজনের একটি বিশাল ইলিশ ১৪ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বানারীপাড়া পৌরশহরের বন্দর বাজারে এ ইলিশটি বিক্রি হয়।

চাখার ইউনিয়নের চালিতাবাড়ি গ্রামের জেলে রুমেনের জালে সকালে ধরা পড়ে বিরল এই রূপালি ইলিশ। পরে তিনি মাছটি নিয়ে যান বন্দর বাজারের সত্যরঞ্জনের মৎস্য আড়তে। সেখানে পাইকারি বিক্রেতা বিকাশ মাছটি ১৪ হাজার ৩০০ টাকায় ক্রয় করেন।

ইলিশটি দেখতে বাজারে কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমে যায়। বড় আকারের ইলিশ পেয়ে এবং উচ্চ দামে বিক্রি করতে পারায় জেলে রুমেন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “এমন মাছ ধরা পাওয়া আমার জীবনের বড় সৌভাগ্য।”