পিরোজপুর প্রতিনিধি :

বরিশালে আগামী ২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য আঞ্চলিক মহাসমাবেশকে সফল করতে পিরোজপুরে সমমনা ৮ ইসলামী দলের যৌথ প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে জেলা জামায়াতের আমির তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় নেতারা আঞ্চলিক মহাসমাবেশ সফল করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন—ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি ইয়াহিয়া, খেলাফত মজলিসের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, মুজাহিদ কমিটির সভাপতি আলাউদ্দিন শেখ এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুর রব।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন—খেলাফত মজলিসের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ, জামায়াতের সেক্রেটারি মো. জহিরুল হক, সহকারী সেক্রেটারি সিদ্দিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রাজ্জাক, পেশাজীবী নেতা ড. আব্দুল্লাহিল মাহমুদ, প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি সোহরাব হোসেন জুয়েল, জামায়াত নেতা রমজান হোসেন খলিফা, জহিরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

নিজস্ব প্রতিবেদক

হত্যা মামলায় জড়িয়ে দলীয় পদ স্থগিত হওয়া বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ওবায়দুল হোসেনকে স্বপদে বহাল করেছে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি।

সোমবার কেন্দ্রীয় যুবদলের উপ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তার পদ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ২২ আগস্ট ওবায়দুল হোসেনের ওপর আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে পুনরায় সদস্য সচিবের দায়িত্বে বহাল করা হলো। এই সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে কার্যকর করেছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন।

দীর্ঘ ১৫ মাস পর পদ ফিরে পাওয়ায় মঙ্গলবার বিকালে এলাকায় মোটরসাইকেল শোডাউন করেন তার অনুসারীরা। এসময় ফুলের মালা পরিয়ে তাকে বরণ করে নেন স্থানীয় যুবদল নেতাকর্মীরা।

গত বছরের ১২ আগস্ট বাবুগঞ্জ উপজেলার ঘটকেরচর গ্রামে মাদক ব্যবসার ভাগের টাকা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় সুলতান হাওলাদার (৬৫) নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের পুত্রবধূ সাদিয়া আফরিন হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ ওঠে—ওই ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ওবায়দুল হোসেন। মামলাটি এখনও আদালতে বিচারাধীন।

তবে স্বপদে বহাল হওয়ার পর ওবায়দুল হোসেন দাবি করেন, তাকে রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্ত্র করে হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাননি। সেই কারণেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদক

বরিশালের বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি আমির খানকে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মিরপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আমির খান জাহাঙ্গীরনগর (আগরপুর) ইউনিয়নের চর জাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকেই আমির খান মিরপুরে আত্মগোপনে ছিল। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে বরিশালে আনা হচ্ছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গত ১৭ নভেম্বর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর সন্ধ্যায় আগরপুর স্টিল ব্রিজ এলাকায় মিষ্টি বিতরণকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি রবিউল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের অরকা পল্লীতে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকালে পৌর যুবদলের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আয়োজিত এ ক্যাম্পে পাঁচ শতাধিক রোগী চিকিৎসাসেবা নেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব এবিএম মোশাররফ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফারুক।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল আজিজ মুসুল্লী, কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি জাফরুজ্জামান খোকন, মহিপুর থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহজাহান পারভেজসহ বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি মোশাররফ হোসেন বলেন, “সংকটময় সময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক দায়িত্ব। যুবদলের এই উদ্যোগ মানবিকতার দৃষ্টান্ত।”

সভাপতি ফারুক বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। ভবিষ্যতেও যুবদল মানুষের পাশে থাকবে।”

দিনব্যাপী ক্যাম্পে চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, জ্বর, চর্মরোগসহ বিভিন্ন সমস্যার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা পরামর্শ দেন। পরে রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরন।

আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতেও মানবসেবামূলক এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ–মুলাদী) আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। এতে দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রার্থী ঘোষণায় দেরি হওয়ায় নির্বাচনকেন্দ্রিক কার্যক্রমও দৃশ্যমান নয় বিএনপির পক্ষ থেকে।

অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামী প্রায় ১০ মাস আগে থেকেই এ আসনে বরিশাল মহানগর আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন বাবরের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই তিনি নিয়মিতভাবে উঠান বৈঠক, গণসংযোগ এবং এলাকার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়সহ বিভিন্ন প্রচারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয়দের মতে, তিনি বাবুগঞ্জ ও মুলাদীর বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিকভাবে মানুষের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং নানা সামাজিক বিষয় ভোটারদের সামনে তুলে ধরছেন। তার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন।

বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা না করায় দলের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে স্থবিরতা দেখা দিলেও মাঠে সক্রিয় রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি উপাধ্যক্ষ মাওলানা মো. সিরাজুল ইসলাম ইতোমধ্যে প্রচারণা জোরদার করেছেন। একইভাবে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের পক্ষেও নিয়মিত প্রচারণা চলছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বিশ্লেষণে জানা যায়, বিএনপি এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী ঘোষণা না করায় অন্যান্য দল—বিশেষত জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং এবি পার্টি—আসনটিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে সুযোগ পাচ্ছে। তবে বিএনপি শক্তিশালী প্রার্থী নিয়ে আসলে প্রতিযোগিতার চিত্র বদলে যেতে পারে।

স্থানীয় কয়েকজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি বলেন, “জহির উদ্দিন বাবরের মার্জিত আচরণ, সাদাসিধে জীবনযাপন ও সততা তাকে এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সম্মানিত ব্যক্তিরাও তার সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারেন। বাবুগঞ্জ–মুলাদীর অনেকেই তাকে জনসেবামূলক মনোভাবের কারণে ইতিবাচকভাবে দেখছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চাঁদকাঠি গ্রামে একসঙ্গে স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া পাঁচ শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সোমবার তাদের বরিশাল শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

শিশুদের মা লামিয়া আক্তার জানান, তার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনজন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এবং বাকি দুইজনের রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তিনি বলেন, “এক সন্তানের খরচ জোগানোই কঠিন, সেখানে পাঁচ সন্তানের চিকিৎসা ও লালন-পালনে পাঁচগুণ ব্যয়। স্বামী ছোট ব্যবসা করে, তাই সহযোগিতা পেলে উপকার হবে।”

শেবাচিম হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক ডা. মারুফ বলেন, জন্মের সময় পাঁচ শিশু কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেলেও তাদের বয়স কম হওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও দুর্বল। তিনি জানান, শিশুদের বয়স এক মাসের একটু বেশি হওয়ায় তারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ছয় মাস বয়স হলে সামগ্রিক ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।

তিনি আরও জানান, দরিদ্র পরিবারের এই পাঁচ নবজাতকের পরিচর্যার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। চিকিৎসকরাও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করছেন।

এদিকে শিশুদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক একেএম আখতারুজ্জামান তালুকদার এবং সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ হাসপাতালে এসে শিশুদের জন্য চিকিৎসার ওষুধ, দুধ, প্যাম্পার্সসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ তুলে দেন।

সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, “শিশুদের পাশে আমরা সবসময় আছি। ‘৮৪ ইভেন্ট’-এর পক্ষ থেকেও একটি গরু উপহার দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে আবার সহায়তা নিয়ে এসেছি। তারা সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে—এ ব্যাপারে আমাদের নজর থাকবে।”

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর বাউফলের চাঁদকাঠি গ্রামের মুদিদোকানি সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী লামিয়া আক্তার স্বাভাবিকভাবে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর বরিশালের একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর শিশুদের শেবাচিম হাসপাতালে আনা হয়। তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হয়ে তারা বাড়ি ফিরে যায়।

বরগুনা প্রতিনিধ :
শীতের শুরুতেই বরগুনা জেলাজুড়ে শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও তীব্র ডায়রিয়ার প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এতে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে। শয্যা সংকটের কারণে অনেক শিশুকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সংকট তৈরি হওয়ায় অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জ্বর-কাশি থেকে শুরু হওয়া সংক্রমণ দ্রুত নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টে রূপ নিচ্ছে। ৫০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন যেখানে সর্বোচ্চ ৫০–৬০ রোগী থাকার কথা, সেখানে এখন দেড় শতাধিক শিশু ভর্তি রয়েছে। শয্যার তিন গুণ বেশি রোগী থাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় চাপ বাড়ছে।

হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে সাত শতাধিক শিশু এবং ভর্তি হয়েছে চার শতাধিকেরও বেশি। এসব পরিসংখ্যান জেলার স্বাস্থ্যসেবার সংকটকে স্পষ্ট করে তুলেছে।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, নিউমোনিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক, ক্যানোলা, স্যালাইনসহ বিভিন্ন জরুরি সরঞ্জাম হাসপাতাল থেকে না পেয়ে বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে শুধু নাপা সিরাপই সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলোও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে করাতে হচ্ছে বলে জানান তারা।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রেজওয়ানুর আলম বলেন, ওষুধ ও সরঞ্জাম সংকটের বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।

হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মাহমুদ মুর্শিদ শুভ অভিভাবকদের সতর্ক করে বলেন, “বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগতে দেওয়া যাবে না। সামান্য সমস্যা দেখা দিলেই শিশু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা গেলে নিউমোনিয়া জটিল আকার ধারণ করে না।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে বরিশালে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে ‘সম্মিলিত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পর্ষদ বরিশাল’-এর আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে নারী ও কন্যার প্রতি সব ধরনের সহিংসতা বন্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এতে বক্তারা বলেন, সমাজে নারী ও কন্যাদের ওপর সহিংসতা এখনও উদ্বেগজনক হারে ঘটছে। ঘরে-বাইরে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমে অপমান, হুমকি, স্ট্যালকিংসহ বিভিন্ন সহিংসতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে নারীদের। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেবল আইনি ব্যবস্থা নয়, পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও সমন্বিত প্রচারণা জরুরি।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা। বক্তব্য দেন উন্নয়ন সংগঠক আনোয়ার জাহিদ, পিডিও’র নির্বাহী পরিচালক রনজিত দত্ত, উন্নয়ন কর্মী হাসিনা বেগম নিলা এবং আইসিডিএ’র নির্বাহী পরিচালক কাজী নওশাত। বক্তারা বলেন, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি সভ্য সমাজের পরিচয় এবং ন্যায়বিচারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

অনুষ্ঠানে নারী সংগঠন, উন্নয়ন সংস্থা, এনজিও প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। বক্তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সমাবেশ শেষে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিত সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
হিজলা উপজেলার দীর্ঘদিনের অবহেলা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইউনিয়ন–মৌজা কেটে নেওয়া, ভূমি দস্যু ও বালুমহল সিন্ডিকেটের দখল–লুটপাট, এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হিজলা উপজেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম দুলাল।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বরিশালের হোটেল কিংফিশারে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন—১৯৯২ ও ২০০৪ সালে রাজনৈতিক স্বার্থে হিজলার গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন ও মৌজা অন্য জেলায় কেটে দেওয়া হয়।

২০০৮ সালের পর সীমান্তবর্তী এলাকায় ভূমি দস্যুরা হাজার হাজার একর জমি দখল করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর গৌরবদী ও দুলখোলায় ব্যাপক লুটপাট, চাঁদাবাজি ও মব সন্ত্রাস ঘটে।

সরকারি বালুমহলকে কেন্দ্র করে আন্তজেলা অপরাধী সিন্ডিকেট কোটি টাকার বখরা বাণিজ্যে লিপ্ত থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। বালুমহলের উপবিডার জাকির শিকদারের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ১৫–২০ শ্রমিক আহত হলেও মামলার অগ্রগতি নেই।

হিজলা সদরে এখন প্রকাশ্যে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রধারী গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্য চলছে। তিনি জানান, ডিআইজি বরিশাল রেঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন।

দুলাল বলেন, “হিজলার মানুষ আজও ভয়াবহ নদীভাঙন ও সন্ত্রাসের মাঝে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। হিজলাকে রক্ষা করতে জাতীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বরিশালে অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিনের উদ্যোগে সোমবার (২৫ নভেম্বর) গভীর রাতে নগরীর নদী বন্দর এলাকায় এ মানবিক সহায়তা করা হয়।

রাত বাড়লেও শীতের প্রকোপে কাঁপছিল নদী বন্দর এলাকায় থাকা অসহায় মানুষজন। তাদের হাতেই পর্যায়ক্রমে কম্বল তুলে দেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন। একেকজন কম্বল পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

এসময় অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন বলেন, “তারেক রহমান সবসময় দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার বার্তা দেন। শীতের রাতে অসহায় মানুষগুলোর কষ্ট কিছুটা লাঘব করতেই আমাদের এই আয়োজন। বিএনপি মানুষের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোকে দায়িত্ব মনে করে।

কম্বল বিতরণ কার্যক্রমে জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।