নিজস্ব প্রতিবেদক :
আধুনিক পদ্ধতিতে আখ চাষ সম্প্রসারণ ও কৃষকের উৎপাদন বাড়াতে জীবাণু সারের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএসআরআই) মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্র কাঠি এলাকায় বিএসআরআই ও বিএআরসির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আধুনিক পদ্ধতিতে আখ চাষে জীবাণু সারের গুরুত্ব ও ব্যবহার বিষয়ক মাঠ দিবস ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডিএসবিএফ প্রকল্পের প্রকল্প ইন-চার্জ ড. খন্দকার মহিউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসআরআইয়ের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মুনির হোসেন, প্রশাসন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. নুরে আলম সিদ্দিকী, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শরিফুল ইসলাম।

এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএসআরআই বরিশাল উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রতন কুমার গনপতি, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক, বিএসআরআইর জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফয়সাল মাহমুদ এবং কৃষক প্রতিনিধি আব্দুস ছালাম।

প্রধান অতিথি ড. কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “একসময় জমির উর্বরতা ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার মাটির বুনটে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় আখসহ সব ধরনের ফসল উৎপাদনে জৈব সার ও জীবাণু সার ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, জীবাণু সার ব্যবহারে, রাসায়নিক সারের প্রয়োজন কমবে, মাটির স্বাস্থ্য শক্তিশালী হবে, আখের গুড়ের গুণগত মান অটুট থাকবে, বাজারে এর চাহিদা বাড়বে, কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন ।

মাঠ দিবসের এই আয়োজনকে ঘিরে ক্ষুদ্র কাঠি এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। অর্ধশতাধিক আখচাষি অংশগ্রহণ করে আধুনিক চাষাবাদ, জমি প্রস্তুত, সার ব্যবস্থাপনা ও রোগ দমন প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দরপত্রে অনিয়ম ও প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং একই পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বর্তমানে তিনি খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুদক পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক পার্থ চন্দ্র পাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার বাকি তিন আসামি হলেন— বরিশালের ঠিকাদার শিপ্রা রানী পিপলাই, তার ছেলে সোহাগ কৃষ্ণ পিপলাই এবং স্বামী সত্য কৃষ্ণ পিপলাই।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে এমএসআর সামগ্রী কেনার জন্য ৫ কোটি টাকার এপিপি অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ডা. শামীম ২ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার দরপত্র আহ্বান করেন।

দরপত্রে গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা, ওষুধ, কেমিক্যাল, আসবাবপত্র ও কিচেন সামগ্রী কেনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। ছয়টি গ্রুপে দরপত্র বিক্রি দেখানো হলেও চারটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে—
মেসার্স আহসান ব্রাদার্স, পিপলাই এন্টারপ্রাইজ, বাপ্পী ইন্টারন্যাশনাল ও শহিদুল ইসলাম।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রধান হিসেবে ডা. শামীম তিনটি প্রতিষ্ঠানকে উপযুক্ত বিবেচনা করে কার্যাদেশ প্রদান করেন। কিন্তু তদন্তে দেখা যায় এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা পিপলাই পরিবারের সদস্যদের নামে হলেও পরিচালনা করেন একই ব্যক্তি সোহাগ কৃষ্ণ পিপলাই।

আহসান ব্রাদার্সের মালিক দেখানো হয় তার বাবা সত্য কৃষ্ণ পিপলাইকে
বাপ্পী ইন্টারন্যাশনালের মালিক তার মা শিপ্রা রানী পিপলাই
আর পিপলাই এন্টারপ্রাইজ সোহাগের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান
তিন প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাও একই— ৮৩৭/৮৩৮ উত্তর কাটপট্রি, বরিশাল সদর।

দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, একই পরিবারের তিন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে দরপত্রে কৃত্রিম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে কাজ গ্রহণ করা হয়েছে। যা পিপিআর বিধিমালা ২০০৮-এর ১২৭(৩)(খ) অনুযায়ী চক্রান্তমূলক কার্য হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বাদী কর্মকর্তা পার্থ চন্দ্র পাল বলেন, “একই পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান তিনটিকে মূল্যায়ন কমিটির মাধ্যমে কার্যাদেশ দেওয়ার ঘটনা ইচ্ছাকৃত চক্রান্তেরই প্রমাণ। মামলা রেকর্ডের পর নথি সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযুক্ত ডা. শামীম আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো ও ভিত্তিহীন। আমাকে ষড়যন্ত্র করে জড়ানো হয়েছে।

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
কুয়াকাটার ব্যস্ততম জিরোপয়েন্ট থেকে লেম্বুর বন পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়ক কার্পেটিং কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের দাবি মানহীন উপকরণ,বিটুমিন কম ব্যবহার, অপরিকল্পিত নকশা এবং লবণাক্ত বালু দিয়ে নিম্নমানের কাজ করায় সড়কটি নির্মাণের শুরুতেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

উপকূলীয় অঞ্চলের এ সড়কটি ঝড়-বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বেড়িবাঁধ ঘেঁষে নির্মিত এ সড়কে নিম্নমানের কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে অনিয়মের দৃশ্য বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসমান খোয়া ঢালাই, বিটুমিন কম থাকায় কার্পেটিং ঠিকমতো বসছে না, এমনকি কিছু জায়গায় হাত দিয়েই কার্পেটিং উঠে আসছে।

এ পরিস্থিতির প্রতিবাদে ‘স্টুডেন্ট এলায়েন্স’-এর ব্যানারে শিক্ষার্থীরা কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ সড়কে কাপড় বিছিয়ে প্রতীকী ‘সড়কের জানাজা’ পড়েন। পরে দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

৩ কোটি টাকার প্রকল্প, কাজ বাকি ৪০ শতাংশ এলজিইডির তথ্য অনুযায়ী, জিরোপয়েন্ট থেকে সূর্যাস্ত পয়েন্টের আগ পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। কাজ পেয়েছে ‘ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, মালিক জসিম মৃধা।

ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ।

স্থানীয় বাসিন্দা কাদের মাঝি বলেন, আগে রাস্তা ভালো ছিল। এখন আধা ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে কাজ করছে। এমন মানহীন রাস্তা আমরা চাই না। ঠিকভাবে করতে পারলে করুক, না পারলে কাজ বন্ধ করুক।

জেলে জাকির হোসেন সোলেমান আকন বলেন,এই বেড়িবাঁধ আমাদের জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে। এখানে অনিয়ম হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক মাহমুদ হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
মানুষ হাত দিয়ে কার্পেট তুলে দেখাচ্ছিল। কাজের মান খুবই খারাপ। পর্যটন এলাকায় এমন অনিয়ম দুঃখজনক।

অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার জসিম মৃধা বলেন, এখানে ৪০ মিলি কার্পেটিং দরকার ছিল, কিন্তু আমাকে দেওয়া হয়েছে ২৫ মিলি। এতে সমস্যায় পড়েছি। আশেপাশে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা নেই। বরাদ্দে ড্রেজিংয়ের বালু থাকলেও ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে বালু আনতে হচ্ছে। তারপরও আমরা ওয়ার্ক অর্ডার অনুসারে কাজ করছি।

এ বিষয়ে এলজিইডি পটুয়াখালী জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসাইন আলী মীর বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা সড়ক পরিদর্শন করেছি। কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। ঠিকাদারকে নিয়ম মেনে ও মান বজায় রেখে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আমীরুল মুজাহিদীন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই-এর উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চরমোনাইয়ের তিন দিনব্যাপী অগ্রহায়ণের মাহফিল। বুধবার (২৬ নভেম্বর) জোহরের নামাজের পর আনুষ্ঠানিকভাবে মাহফিলের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, “মানুষকে আল্লাহ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন নির্দিষ্ট দায়িত্ব—বান্দেগি, ন্যায় ও সত্যের পথে চলার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য। দুনিয়া হচ্ছে সেই পরীক্ষা কেন্দ্র। এই পরীক্ষায় সফলতাই মানুষের প্রকৃত পরমানন্দ।”
তিনি জানান, চরমোনাই মাহফিলের উদ্দেশ্য কোনো দুনিয়াবি লক্ষ্য নয়; বরং মানুষকে আল্লাহর প্রতি মনোযোগী করা, দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করা এবং আত্মশুদ্ধির পথে ফিরিয়ে আনা।

তিনি আরও বলেন, “দুনিয়ার মোহই সকল অন্যায়ের মূল কারণ। তাই যে কেউ যদি দুনিয়াবি উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসেন, তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আখেরাতমুখী আমল করার প্রস্তুতি নিন। আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত থাকুন, অহংকার ও আমিত্ব দূর করে দিন।”

পীর সাহেব চরমোনাই আরও জোর দিয়ে বলেন,
“ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় জীবনও ইসলামের আলোকে পরিচালিত হলে সত্যিকার মুক্তি আসবে।”

চরমোনাই মাদরাসার মূল মাঠসহ পাশের আরও একটি মাঠ মিলিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই বৃহৎ মাহফিল। দুই মাঠেই রয়েছে কঠোর শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাব্যবস্থা। বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নিরাপত্তা বাহিনীর স্পেশাল টিম দায়িত্ব পালন করছে। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তি ও সামগ্রী খুঁজে পেতে প্রতিটি মাঠেই রয়েছে হারানো ক্যাম্প।

মাহফিলে আগত মুসল্লীদের চিকিৎসাসেবার জন্য ১০০ শয্যার স্থায়ী মাহফিল হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। ১৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ৪০ জন ডাক্তার সার্বক্ষণিক সেবা দিচ্ছেন। মাঠে রয়েছে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স ও ২টি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স। অসুস্থ হলে মাঠ থেকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছাতে রয়েছে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক দল।

সারাদেশ থেকে আগত মুসল্লীদের জন্য রয়েছে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সহস্রাধিক মানসম্মত টয়লেট, ওজু ও গোসলের পৃথক ব্যবস্থা, খাদ্য প্রস্তুত ও পরিবেশনের স্থান, হালকা ও প্রশিক্ষণ।

আজ সকাল ৮টা থেকে হাজারো মুসল্লীকে বিভিন্ন হালকায় বিভক্ত করে হাতে-কলমে সালাত শিক্ষা এবং ইসলামের মৌলিক বিধান বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিন দিনই এই কার্যক্রম চলবে।

মাহফিলের প্রথমদিন অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি সম্মেলন।
দ্বিতীয় দিন হবে ওলামা সম্মেলন।
শেষদিন সকালে অনুষ্ঠিত হবে ছাত্র গণজমায়েত।
এ ছাড়া ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ও ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যোগে যুবক ও শ্রমিকদের নিয়ে আলাদা মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী ২৯ নভেম্বর শনিবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে পীর সাহেব চরমোনাই-এর আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী এ মাহফিলের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে।

চরমোনাই মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৪ সালে। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাওলানা সৈয়দ এছহাক (রহ.)।
তার ইন্তেকালের পর ১৯৭৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করীম (রহ.)।
২০০৬ সালে তার ইন্তেকালের পর থেকে বর্তমানে আমীরুল মুজাহিদীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম — পীর সাহেব চরমোনাই।

মোঃ এমদাদুল কাসেম সেন্টু, উজিরপুর :

“দেশীয় জাত উন্নত প্রযুক্তি, প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি”—এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল মাঠ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মাওলা সভাপতিত্ব করেন এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ জেরিন জামান অনি।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজা।
তিনি বলেন, “দেশীয় জাতের সংরক্ষণ ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। পশুপালনবান্ধব উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে।”

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহেশ্বর মণ্ডল, উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সালাম, উজিরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম খান, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম আলাউদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন খান, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আব্দুল খালেক

এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক সরদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোহেল হাওলাদার, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক এএফএম সামসুদ্দোহা আজাদ, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ শাহাবুদ্দিন আকন সাবু, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান প্রিন্স, উজিরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন শরীফ, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আসমা বেগম, পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মোঃ আল-আমিন সরদারসহ স্থানীয় সামাজিক, রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য র‌্যালি, প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
শেষে প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজা প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়নে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।

শাহিন সুমন :
মজিবর রহমান সরওয়ার বরিশালে রাজনৈতিক পরিচয় যেমন পেয়েছেন সংসদ সদস্য, হুইপ, সিটি কর্পোরেশন মেয়র ও বিএনপি উচ্চপদস্থ নেতা হিসেবে। কিন্তু তার সেই পরিচয়ের পাশে ছিলো বরিশালের উন্নয়নের জন্য স্থানীয়ভাবে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার। মামুলি ঘোষণার মধ্যেই নয়, বরং বাস্তবচেষ্টায় কিছু উদ্যোগ তার নামের সঙ্গে যুক্ত ছিল।

গত দশকে এবং তার আগে পরে সময়ে কিছু উন্নয়নমূলক দাবি, পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গা তিনি পেশ করেছেন এবং অংশবিশেষ বাস্তবায়নেও বলেছিলেন। সে কাজগুলো বিশেষত অবকাঠামো, নগর উন্নয়ন, শিক্ষাসহ সামাজিক কাজ যদিও পুরো ছবি তৈরি করতে পারেনি, তথাপি বরিশালের বদলে যাওয়া চিত্রে তার অবস্থান স্বীকৃত।

রাস্তাঘাট, সড়ক ও নগর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন। বরিশালে দীর্ঘদিন ধরে সড়ক ও যোগাযোগ সমস্যার কারণে যানজট, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও অস্বাস্থ্যকর অবস্থা চলছিল। সরোয়ার মেয়র থাকাকালীন নগরীর অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোর সংস্কার ও নতুন রাস্তাপথ, ড্রেনেজ ও কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

পাশাপাশি, বড় সড়ক (হাইওয়ে/ন্যাশনাল রোড) উন্নয়নের দাবি তার নেতৃত্বে বারবার উঠে এসেছে। সম্প্রতি এক মানববন্ধন আয়োজনেও অংশ নেন, যেখানে ৬-লেইনের জন্য বরিশাল–ফরিদপুর ও বরিশাল–কুয়াকাটা জাতীয় সড়ক উন্নয়নের পুনরায় দাবি করা হয়।

এই ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা, যদি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হত, নগরবাসীর জন্য দৈনন্দিন যাতায়াতকে সহজ ও সুষ্ঠু করত।

সিটি কর্পোরেশন মেয়র হিসেবে সরোয়ার তার দায়িত্বের আওতায় ড্রেনেজ উন্নয়ন, খাল খনন ও নর্দমা নির্মাণ বরিশালে বর্ষার সময় জলাবদ্ধতা ও বৃষ্টির জলাবৃষ্টির সংকট কমানোর চেষ্টা ছিল অপরিসীম।

শহরের পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাস্তাঘাট, শহর লাইটিং ও নগর সৌন্দর্য এসব দিক উন্নয়নের পরিকল্পনা ছিল। এমনকি, নগর ব্যাবস্থাপনায় একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পক্ষে ছিলেন মজিবর রহমান সরওয়ার, যাতে বরিশালকে একটি আধুনিক, পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তোলা যায়।

যদিও সব পরিকল্পনা বহুলাংশে বাস্তবায়ন হয়নি, তার নকশা ও পরিকল্পনাগত অবস্থান দেখিয়েছিলেন বরিশালকে “নগর উন্নয়ন” পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা।

সামাজিক দায়বদ্ধতায় মানুষের জন্য কাজ এবং দৃষ্টান্ত মাত্র রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয় সরোয়ার মাঝে মাঝে সামাজিক ও মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন।

উন্নয়ন দাবির মধ্য দিয়ে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক সরোয়ার শুধু প্রশাসনিক কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন না; তিনি বরিশালের উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি দাবিও তুলেছেন সড়ক, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও ন্যায্য বরাদ্দ।

এ বছরই এক মানববন্ধনে জোরালো দাবি ছিল বরিশাল বিভাগের জন্য জাতীয় বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দ বৃদ্ধি, সড়ক ও স্বাস্থ্য খাত বাস্তবায়ন।

এর মাধ্যমে তিনি উপদেষ্টা ও সরকারের নজর আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন, যাতে বরিশালের অবহেলিত অংশগুলো উন্নয়নের দৃষ্টিতে আসতে পারে।

মজিবর রহমান সরওয়ার সংসদ সদস্য থাকাকালিন সময় কিন্তু, সব পরিকল্পনা বা প্রতিশ্রুতি সফল হয়নি। বিভিন্ন কারণ অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক প্ল্যান ও বাস্তবতার মধ্যে সময়মতো কাজ শেষ করতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

এমনকি, তার সংসদ সদস্য হিসেবে কর্মকালে তার কিছু সময় পরে বিতর্ক ও নির্দেশনা-পরিবর্তনও হয়েছে।

অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি, বজেট অপ্রতুলতা, রাজনৈতিক মেরুপরিবর্তন ঘাটতির কারণে। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে অনেক প্রকল্প বাতিল করা হয়। প্রকল্পের ধারাবাহিক কাজ না হওয়ার ফলে অনেক সুযোগই আদৌ কাজে রূপ পায়নি।

তবে, পুরোপুরি সফল না হলেও তার দৃষ্টিভঙ্গা, পরিকল্পনা ও অঙ্গীকার বরিশালের উন্নয়নের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে মজিবর রহমান সরওয়ার।

অনেকেই ধারনা করছেন বর্তমানে সময় হয়েছে পুরনো পরিকল্পনাগুলো পুনর্বিবেচনা করে, নতুন সুযোগ ও চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ফের বাস্তবায়ন করার।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে এটাই হবে তার প্রধান কর্মগুলোর অংশ।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

অপহরণপূর্বক ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. ফেরদৌস শেখকে রাজধানীর দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৮। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকার পর সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ২টার দিকে র‌্যাব-৮, সিপিএসসি বরিশালের নেতৃত্বে এবং র‌্যাব-১০ এর সহায়তায় চুনকুটিয়া বালিকা বিদ্যালয় সড়ক এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

গ্রেফতার ফেরদৌস শেখ (পিতা: আলী আক্কাস শেখ) পিরোজপুর সদর উপজেলার টোন গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৯ সালে পিরোজপুরের নাজিরপুর থানার অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। এরপর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

র‌্যাব জানায়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, পলাতক আসামি গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

গ্রেফতারের পর ফেরদৌস শেখকে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য যাত্রাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

খবর ডেস্ক :
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সোমবার (২৫ নভেম্বর) শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদ করে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

পূর্বের বিধিমালায় একাধিক সীমাবদ্ধতা থাকায় এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। সেসব সীমাবদ্ধতা দূর করে নতুন চাহিদা, বাস্তবতা এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনা যুক্ত করে এবারের হালনাগাদ প্রণয়ন করা হয়েছে।

পূর্বের বিধিমালায় কেবল ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা প্রদান থাকায় সীমিত জনবল দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়নি। এ জন্য নতুন বিধিমালায় ম্যাজিস্ট্রেটগণের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে ট্রাফিক পুলিশের ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে (ট্রাফিক সার্জেন্টের নিচের পদ নয়)।

এখন যদি কোনো ব্যক্তি ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সম্মুখে বিধি ৬ এর উপ-বিধি (২), (৩) বা (৪) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তা হলে উক্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলেই তাকে জরিমানা আরোপ করতে পারবেন। কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, এ উদ্যোগ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নতুন গতি আনবে।

শব্দদূষণের অন্যতম বড় উৎস হর্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে পূর্বের বিধিতে আমদানি, উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি সংক্রান্ত কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকায় তদারকিতে বড় সীমাবদ্ধতা ছিল। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫- এ এ বিষয়ে স্পষ্ট শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত হর্ন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন বিধিমালায় আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো পাবলিক প্লেস বা জনপরিসরে লাউডস্পিকার, মাইক, অ্যাম্প্লিফায়ার ও সুরযন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ; প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ; যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে শব্দসীমা ৯০ ডেসিবল নির্ধারণ এবং অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা; নীরব এলাকায় পটকা, আতশবাজি, হর্ন বা অনুরূপ শব্দসৃষ্টিকারী যেকোনো পণ্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ; রাত্রিকালে নির্মাণকাজ বন্ধ; শিল্পকারখানা ও জেনারেটরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধান সংযোজন; এবং সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দণ্ড নির্ধারণ।

উল্লেখ্য, সরকার অংশীজনদের নিয়ে সভা ও কর্মশালা শেষে খসড়া প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে সকল মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ এবং জনগণের মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খসড়া উন্মুক্ত করা হয়।

এছাড়া বিভিন্ন দেশের বেস্ট প্র্যাকটিস পর্যালোচনা করে ২০০৬ সালের বিধিমালায় থাকা দূর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা হয় এবং বাস্তবতার নিরিখে সেগুলো শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নতুন বিধিমালা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সোমবার (২৫ নভেম্বর) শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদ করে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

পূর্বের বিধিমালায় একাধিক সীমাবদ্ধতা থাকায় এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। সেসব সীমাবদ্ধতা দূর করে নতুন চাহিদা, বাস্তবতা এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনা যুক্ত করে এবারের হালনাগাদ প্রণয়ন করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো পাবলিক প্লেস বা জনপরিসরে লাউডস্পিকার, মাইক, অ্যাম্প্লিফায়ার ও সুরযন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ; প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ; যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে শব্দসীমা ৯০ ডেসিবল নির্ধারণ এবং অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা; নীরব এলাকায় পটকা, আতশবাজি, হর্ন বা অনুরূপ শব্দসৃষ্টিকারী যেকোনো পণ্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ; রাত্রিকালে নির্মাণকাজ বন্ধ; শিল্পকারখানা ও জেনারেটরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধান সংযোজন; এবং সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দণ্ড নির্ধারণ।

উল্লেখ্য, সরকার অংশীজনদের নিয়ে সভা ও কর্মশালা শেষে খসড়া প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে সকল মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ এবং জনগণের মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খসড়া উন্মুক্ত করা হয়।

এছাড়া বিভিন্ন দেশের বেস্ট প্র্যাকটিস পর্যালোচনা করে ২০০৬ সালের বিধিমালায় থাকা দূর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা হয় এবং বাস্তবতার নিরিখে সেগুলো শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নতুন বিধিমালা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
“দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি—প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি” স্লোগানকে সামনে রেখে বরিশালে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৫ উদ্বোধন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের আয়োজনে ও প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় চত্বরে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম সুমন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক মো. মাহফুজুল হক, বরিশালের পুলিশ সুপার মো. শরিফ উদ্দীন এবং জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের হয়, যা নবগ্রাম রোড প্রদক্ষিণ করে পুনরায় কার্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় অতিথিরা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং খামারিদের অগ্রগতির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

আলোচনা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী খামারিদের বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর নানা দিক ঘুরে দেখেন।