নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশাল-৪ (হিজলা–মেহেন্দিগঞ্জ–কাজীরহাট) আসনকে ঘিরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উত্তাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। তরুণ ভোটারদের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী রাজিব আহসান ব্যাপক সাড়া ফেললেও প্রবীণ ভোটাররা ঝুঁকছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মাওলানা আব্দুল জব্বারের দিকে। ফলে আসনটিতে গড়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএনপির অভ্যন্তরে দলীয় বিভাজন, গ্রুপিং এবং কোন্দলের কারণে ধানের শীষের প্রার্থী কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। তবে তরুণ নেতৃত্বের কারণে রাজিব আহসান মাঠের নেতাকর্মীদের নিয়ে এ বিভাজন কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে শক্ত সাংগঠনিক ভিত্তি গড়ে তুলেছে। হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জের একাধিক ইউনিয়নে অতীতের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার ইতিহাস তাদের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে। স্থানীয় ভোটারদের মতে, আব্দুল জব্বার বহু বছর ধরে এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখেছেন এবং শিক্ষক–শিক্ষার্থী থেকে কৃষক–শ্রমিক সবার সমস্যার খোঁজ নিয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে আসছেন। ফলে তাকে অনেকে “শক্ত প্রার্থী” হিসেবেই দেখছেন।
এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ এছাহাক মো. আবুল খায়ের মাঠে শক্ত ভোটব্যাংক থাকলেও এখনো উল্লেখযোগ্য প্রচারণা শুরু করেননি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, ইসলামী আন্দোলন যদি জোটবদ্ধ হয়ে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীকে সমর্থন জানায়, তাহলে এ আসনের ভোটের সমীকরণ পুরোপুরি বদলে যেতে পারে।
একাধিক ইসলামী আন্দোলন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হলে ইসলামী জোট সহজেই বিজয়ী হতে পারে।
যদিও কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে জোট বা সমর্থন নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি, তবে রাজনৈতিক মাঠে আলোচনা চলছেসময়ই চূড়ান্ত চিত্র স্পষ্ট করবে।
এদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রাজিব আহসান দিন-রাত মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। গণসংযোগ, পথসভা ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তিনি তরুণ ও নতুন ভোটারদের টার্গেট করে সমর্থন ঘরে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সব মিলিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৪ আসনটি এখন পুরো জেলার সবচেয়ে আলোচিত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনে পরিণত হয়েছে।



