আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা :
কুয়াকাটার ব্যস্ততম জিরোপয়েন্ট থেকে লেম্বুর বন পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়ক কার্পেটিং কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের দাবি মানহীন উপকরণ,বিটুমিন কম ব্যবহার, অপরিকল্পিত নকশা এবং লবণাক্ত বালু দিয়ে নিম্নমানের কাজ করায় সড়কটি নির্মাণের শুরুতেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চলের এ সড়কটি ঝড়-বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বেড়িবাঁধ ঘেঁষে নির্মিত এ সড়কে নিম্নমানের কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে অনিয়মের দৃশ্য বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসমান খোয়া ঢালাই, বিটুমিন কম থাকায় কার্পেটিং ঠিকমতো বসছে না, এমনকি কিছু জায়গায় হাত দিয়েই কার্পেটিং উঠে আসছে।
এ পরিস্থিতির প্রতিবাদে ‘স্টুডেন্ট এলায়েন্স’-এর ব্যানারে শিক্ষার্থীরা কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ সড়কে কাপড় বিছিয়ে প্রতীকী ‘সড়কের জানাজা’ পড়েন। পরে দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
৩ কোটি টাকার প্রকল্প, কাজ বাকি ৪০ শতাংশ এলজিইডির তথ্য অনুযায়ী, জিরোপয়েন্ট থেকে সূর্যাস্ত পয়েন্টের আগ পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। কাজ পেয়েছে ‘ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, মালিক জসিম মৃধা।
ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ।
স্থানীয় বাসিন্দা কাদের মাঝি বলেন, আগে রাস্তা ভালো ছিল। এখন আধা ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে কাজ করছে। এমন মানহীন রাস্তা আমরা চাই না। ঠিকভাবে করতে পারলে করুক, না পারলে কাজ বন্ধ করুক।
জেলে জাকির হোসেন সোলেমান আকন বলেন,এই বেড়িবাঁধ আমাদের জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে। এখানে অনিয়ম হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক মাহমুদ হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
মানুষ হাত দিয়ে কার্পেট তুলে দেখাচ্ছিল। কাজের মান খুবই খারাপ। পর্যটন এলাকায় এমন অনিয়ম দুঃখজনক।
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার জসিম মৃধা বলেন, এখানে ৪০ মিলি কার্পেটিং দরকার ছিল, কিন্তু আমাকে দেওয়া হয়েছে ২৫ মিলি। এতে সমস্যায় পড়েছি। আশেপাশে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা নেই। বরাদ্দে ড্রেজিংয়ের বালু থাকলেও ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে বালু আনতে হচ্ছে। তারপরও আমরা ওয়ার্ক অর্ডার অনুসারে কাজ করছি।
এ বিষয়ে এলজিইডি পটুয়াখালী জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসাইন আলী মীর বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা সড়ক পরিদর্শন করেছি। কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। ঠিকাদারকে নিয়ম মেনে ও মান বজায় রেখে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



