নিজস্ব প্রতিবেদক :
১৯৭৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কোনো জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর-৫ আসনে বিজয়ী হতে পারেনী আওয়ামী লীগ। ফলে আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত নব্বইয়ের দশক থেকে।

তবে এবার এই ধারাবািকতার চ্যালেঞ্জ ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়াবে । বিশেষ করে মহানগর বিএনপির মধ্যে একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বরিশাল মহানগরীতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে সাধারন ভোটারদের অনেকটাই প্রভাবিত করছে বলে মনে করছেন অনেকে। দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেয়া হউক না কেন তাকে বিজয়ী করতে কষ্টসাধ্য হবে বলে ধারনা তাদের।

বরিশাল মহানগর বিএনপি ৪ ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে মহানগর বিএনপির বাইরে যারা রয়েছেন তারাও এর সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

তার মধ্যে আগেভাগে জামায়াত ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী ঘোষনা করায় তারা নির্বাচনী মাঠে থাকলেও বিএনপির প্রার্থী ঘোষনা না হওয়ায় একাধিক প্রার্থী বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে তাদের প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন। করছেন প্রচার প্রচারনা।

কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী এবারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় একটি দল না থাকায় ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে মরিয়া জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার জিয়া, ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খান নাসরিন, সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদসহ একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ায় এর প্রভাব ফেলবে আাগমী সংসদ নির্বাচনে।

এর মধ্যে সদর আসন থেকে প্রার্থী বাছাইয়ে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক কেন্দ্রর ডাকে সাক্ষাৎকার দিয়ে আসলেও বাকিরাও রয়েছেন আশায়।

প্রাথী হতে মরিয়া উপদেষ্টা এ্যাড. মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. বিলকিস জাহান শিরীন, জেলা দক্ষিন বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. আবুল কালাম শাহিন, মহানগর বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।

ইতিমধ্যে ভোট প্রার্থনা করতে মাঠে নেমে পড়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক।

এছাড়া মহানগর বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন ৩০টি ওয়ার্ডের নেতা কর্মিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে নিজেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।

পৃথক এ অবস্থান আর আলাদা হয়ে দলের কর্মকান্ড কতটা সুফল বয়ে আনবে সেটাই দেখার বিষয়। মহানগরে বর্তমান ও সাবেক র্শীর্ষ স্থানীয় নেতারা দলের পক্ষে যাকেই মনোনয় দেয়া হোক সে প্রশ্নে এক থাকলেও । অভ্যন্তরিন কোন্দল প্রকাশ্যে এতটাই বিভাজন সৃষ্টি করেছে সেখানে তারা দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কতটা একত্রীত হয়ে কাজ করবে সেটাই প্রশ্ন থেকে যায়।

এদিকে এ আসনে জামায়াত ইসলামী থেকে একক প্রার্থী ঘোষনা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল এ্যাড. মুয়াযযম হোসাইন হেলালকে।

একইভাবে ইসলামী আন্দোলন থেকে হাতপাখা নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন চরমোনাই পীরের ভাই মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম।

সব শেষ ২০০৮ সালে নির্বাচনে ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্ণেল অব. জাহিদ ফারুক শামীমের সাথে জয়ী হয়েছিলেন বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছীলেন তৎকালীন সদ্য সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন। তার অকাল মৃত্যুর পর সদরে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মজিবর রহমান সরোয়ারকে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৭১৮ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহিদ ফারুক শামীম। এর পর ভোট বর্জনের নির্বাচেনে ২বার এমপি ছিলেন জাহিদ ফারুক। এছাড়া ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি একবার করে বিজয়ী হয় এ আসনে।

তবে এবারের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ইসলামী কোন দলের সাথে জোট বদ্ধ না থাকায় পেক্ষাপট উল্টো সমিকরন আকছে। দেখা গেছে বিগত দিন গুলোতে জামায়াতসহ আওয়ামী-বিরোধী ভোটও পড়ত ধানের শীষে। তবে এবারের হিসাব সম্পূর্ণ ভিন্ন। হাসিনার আমলে ভোট ডাকাতির সিটি নির্বাচনে তীব্র প্রতিরোধের পরও ৩৫ হাজার ভোট পেয়েছিলেন ফয়জুল করিম। বিএনপির ভোটাররা তখন যাননি কেন্দ্রে।

তাছাড়া জামায়াতেরও ভোট ব্যাংক রয়েছে এখানে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন জোট হলে ঘুরে যাবে ভোটের হিসাব। তাই যতটা সহজে জয় পাওয়া যাবে বলে ভাবছে বিএনপি ততটা সহজ হবে না।

তাছাড়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনৈতিক কর্মকান্ডে। বিএনপির এসব দুর্বল জায়গায় আঘাত হেনে ভোটের মাঠে রাজত্ব করতে মরিয়া জামায়াত ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশালের মুলাদীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অস্ত্র ও ককটেল বোমা সহ সন্ত্রাসী আব্বাস হাওলাদার ও তার ভাই বশির হাওলাদারকে গ্রেফতার করেছে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মুলাদী উপজেলার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর একটি দল ও পুলিশের যৌথ অভিযানে উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের চর কমিশনার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় তাদের বাড়ী থেকে ১৩টি ককটেল বোমা, ১টি রামদা, ২টি চাইনিজ কুড়াল ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আব্বাস ও বশির মুলাদী উপজেলার আব্দুল রব হাওলাদারের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, গ্রেফতার আব্বাস ও তার ভাই কুখ্যাত অপরাধী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বিগত সরকারের আমলে মুলাদী উপজেলা সহ বিভিন্ন জায়গায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব হারুন বিশ্বাস ও তার ভাই কাজিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মন্টু বিশ্বাসের সহযোগী হিসেবে ক্ষমতা ব্যবহার করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন।

থানা সূত্রে জানা যায়, আব্বাস এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র প্রদর্শন, ভূমি দখল ও চাঁদাবাজিসহ আরও অসংখ্য অপরাধে জড়িত ছিল। গত ৫ আগস্টের পর আব্বাস ও তার দোসররা এলাকায় আত্মগোপনে ছিলো। আব্বাসের পরিবার এলাকায় ভূমিদস্যু ও মাফিয়া হিসেবে পরিচিত। ইতোমধ্যে তার নামে একটি হত্যা মামলা সহ দুইটি মামলা রয়েছে এবং দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় পুলিশের ধরা ছোয়ার বাইরে ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তার বাড়িতে তল্লাশি করে বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র, নগদ অর্থ ও ককটেল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে মীরগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় আব্বাসের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও মিষ্টি বিতরণ করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে আব্বাস হাওলাদার সাধারণ মানুষের উপর বছরের পর বছর অত্যাচার চালিয়েছেন। তার ভয়ে বহু মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আব্বাস হাওলাদারের কারণে এলাকায় দীর্ঘদিন ভয়-আতঙ্ক বিরাজ করেছে। তাই সেনাবাহিনী ও পুলিশের এই পদক্ষেপকে তারা ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাজিরচর ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকায় স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এলাকায় আনন্দের সাথে মিষ্টি বিতরণ করেন স্থানীয়রা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সালাম হাওলাদার, কামাল হাওলাদার, সবুজ ব্যাপারী, সাহিন হাওলাদার, খালেক খান, লিটন মৃধা, কালাম হাওলাদার, ফাতেমা বেগম প্রমুখ।

মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতার আব্বাসের বিরুদ্ধে পূর্বেও মামলা রয়েছে। এছাড়া নতুন করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আরিফিন তুষার বয়সে তরুণ হলেও বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশলে অনেক পরিপক্ক ছিল। এ কারণে সে আমাদের বয়সে ছোট হলেও আমরা অনেক সময় তাঁর পরামর্শ নিতাম। তিনি সাংবাদিকতায় যেমন পরিশ্রমি ছিলেন, তেমনি অল্পতেই মুখের হাসি এবং আচার ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারতো। অসময়ে তাঁর চলে যাওয়া আমাদের হৃদয় বিদির্ন করেছে।

 

দৈনিক কালবেলার ব্যুরো প্রধান ও বরিশাল প্রেসক্লাবের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আরিফিন তুষারের মৃত্যুতে শোক সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে তাঁর স্মৃতিচারণ করতে গিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও সহকর্মিরা।

 

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ক্লাবের হলরুমে এ শোক সভা আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাব সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরু। এসময় আরিফিন তুষারের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও তার সহকর্মিরা।

 

তারা বলেন, জন্মের পর মৃত্যূ অনিবার্জ এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু কিছু মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। আরিফিন তুষারের মৃত্যুটিও আমাদের সেইভাবে ব্যাথিত করেছে।

 

তুষার আমাদের স্মৃতির পাতায় আবদ্ধ হয়ে আছে। হৃদয়ের পাতায় থাকবে। তবে হৃদয় বিদির্ন হয় তখন, যখন তুষারের দেড় বছরের ছোট্ট ছেলের মুখের দিকে তাকাই, যখন তুষারের অল্প বয়সী স্ত্রীর দিকে তাকাই।

 

তারা বলেন, তুষার আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছে। আমরা যেনো ওর ছেলেটিকে ভুলে না যাই, পরিবারটিকে যাতে ভুলে না যাই। যে যার অবস্থান থেকে পাশে থাকবেন। আমরা চাই তুষারের স্ত্রী এবং সন্তনকে হৃদয়ে আকড়ে রাখতে। আমরা একটু চেষ্টা করলে ওর পরিবারটা ভালো থাকবে।

 

প্রেসক্লাব সদস্য বেলায়েত বাবলুর সঞ্চালনায় শোক সভায় বক্তব্য রাখেন- আরিফিন তুষারের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ভূঁইয়া, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম ফরিদ, মেহেরুননেছা বেগম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চুন্নু, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী আল মামুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক পুলক চ্যাটার্জ, কার্যনির্বাহী সদস্য কমল সেনগুপ্ত, কোষাধ্যক্ষ সুখেন্দু এদবর, সদস্য অ্যাডভোকেট শাহ আলম, বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান হীরা প্রমুখ।

 

এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শোক সভা শুরু হয়। পরে আরিফিন তুষারের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সবশেষ তুষারের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন বরিশাল বাইতুল মোকাররম মসজিদের ইমান মাওলানা মিজানুর রহমান।

এসময় আরিফিন তুষারের দেড় বছরের শিশুপুত্র আরহাম, স্ত্রী সানজিদা সাবিহা, ভাই হিমেল এবং রিফাত আবরারসহ সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শুক্রবার বাদ জুমা মেহেন্দিগঞ্জের আন্ধারমানিক গ্রামের বাড়িতে আরিফিন তুষারের রুহের মাগফেরাত কামনায় পরিবারের উদ্যোগে দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। একইদিন দিবাগত রাত ১০টায় বরিশাল নদীবন্দর এলাকায় ছিন্নমূল মানুষদের নিয়ে দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠান আয়োজন করেন তার সহকর্মরা। এ উপলক্ষে কোরআন খতম করানো হয়। পরে রাতে পাঁচ শতাধিক অসহায়, দুস্থ এবং ছিন্নমুল মানুষের মাঝে খিচরি বিতরণ করা হয়।

এর আগে গত ০৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর রোডের নিজ অফিসে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে শ্বাসকষ্ট এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন কালবেলার বরিশাল ব্যুরো প্রধান আরিফিন তুষার। দ্রুত তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৮ বছর। তিনি দেড় বছরের পুত্র সন্তান, স্ত্রী, বাবা-মা এবং দুই ভাইসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাষার বরিশাল প্রেসক্লাবের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও প্রেসক্লাব সাংবাদিক কল্যাণ তহবিলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাছাড়া বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বার্তা সম্পাদক ফোরাম বরিশালের নির্বাহী সদস্য এবং জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সম্পাদকীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকল্প উদ্বোধন শেষে অফিসে ফিরছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। পথে হঠাৎ রাস্তার পাশের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে তিনি নিজেই ক্লাস নিলেন।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন স্কুল পরিদর্শনকারী গৌরনদীর ইউএনও এবং পৌর প্রশাসক রিফাত আরা মৌরি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গেরাকুল বেগম আখতারুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মুজিবুর রহমান তালুকদার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে পাঠদান চলাকালে হঠাৎ বিদ্যালয়ে আসেন ইউএনও ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রিফাত আরা মৌরি। সে সময় ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস চলছিল। তিনি সরাসরি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং স্বল্প সময়ের জন্য পাঠদান করেন।

পরে শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে শিক্ষার মানোন্নয়নে নানা দিকনির্দেশনা দেন এবং বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা শুনে সাধ্যমতো সমাধানের আশ্বাস দেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেছে, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও ইউএনও ম্যাডামকে শিক্ষক হিসেবে পেয়ে আমরা খুব আনন্দিত। তিনি আমাদের লেখাপড়ায় আরও মনোযোগী হতে উৎসাহ দিয়েছেন।

গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরি বলেন, মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আকস্মিকভাবে বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হচ্ছে। শিক্ষা উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুবাইয়ে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী রুকমীলা জামানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সিআইডি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ অনুযায়ী মামলা করেছে। মামলাটি কোতয়ালী থানা, সিএমপি, চট্টগ্রামে দায়ের করা হয়েছে।

 

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সাবেক মন্ত্রী ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন এলাকায় ২২৬টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। এসব স্থাপনা ক্রয়ের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ দিরহাম। এছাড়া তার স্ত্রী দুবাইয়ের আল বারশা সাউথ থার্ড এলাকায় দুটি সম্পত্তির মালিক হয়েছেন, যার মূল্য ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ দিরহাম।

অভিযান ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকে মোট চারটি হিসাব ব্যবহার করেছেন। এসব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় দিরহাম ও মার্কিন ডলারে লেনদেন হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩১১ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৭৯৫ টাকা।

 

পাচারকৃত অর্থ ব্যবহার করে সাবেক মন্ত্রী এবং তার স্ত্রী রাস আল খাইমাহ ইকোনোমিক জোন-এই দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিল্ডিং ও কন্সট্রাকশন ম্যাটারিয়াল প্রোডাক্ট ব্যবসার জন্য ‘জেবা ট্রেডিন এফজেডই’ এবং কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবসার জন্য ‘র‌্যাপিড র‌্যাপড র‌্যাপ্টর এফজেডই’। এসব বিনিয়োগের জন্য সরকারের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিচয়ও যথেষ্ট প্রভাবশালী। তিনি ২০১৪ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং পরে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

 

সিআইডি জানিয়েছে, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও রুকমীলা জামান এবং অজ্ঞাত ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে অভিযোগের সব তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত সদস্যদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তার।

সিআইডি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিদেশে সম্পত্তি ক্রয়, কোম্পানি নিবন্ধন এবং ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এই অর্থ পাচার করা হয়েছে। এটি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং দেশের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য এটি একটি গুরুতর মামলা।