২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকটকালে পরিমিত, বাস্তবসম্মত, গণমুখী ও সাহসী হিসেবে অভিহিত করে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
শনিবার (৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকট দূর এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে দেশের অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে উচ্চ গতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে ফিরিয়ে নেওয়া।
তিনি বলেন, প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট দিলেও আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রীদের ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ছোটোছুটি করার কোনো নজির নেই। বিএনপি আজকে বড় বড় কথা বলে, অর্থপাচার, দুর্নীতি এবং দেশকে গিলে খাওয়ার কথা বলে। তাদের আমলে সর্বশেষ বাজেট ছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকার। এরপরও বাজেটের আগে সাইফুর রহমানকে বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন ফোরামে, প্যারিসের কনসোডিয়ামের বৈঠকে বাজেটের আগে দৌড়াতে হয়েছিল ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। আমাদের কোনো অর্থমন্ত্রী ভিক্ষা করতে যায়নি।
বরাবরের মতো আগামী বাজেটেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেন সেতুমন্ত্রী। বলেন, দেশকে অর্থপাচার থেকে রক্ষা করা, যারা অজ্ঞাতসারে দেশের টাকা পাচার করে; ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনার ব্যবস্থা করেছি। এর ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ প্রবাহ বাড়বে বলে আমরা মনে করছি।
বাজেট নিয়ে সিপিডির সমালোচনা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিপিডি, টিআইবি, সুজন কী বলল এসব নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। ওরা সবাই বিএনপির সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলছে। বাস্তবের সঙ্গে কোনো মিল নেই। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে বিএনপি’র দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান লন্ডনে বসে আরাম-আয়েশে দিনযাপন করছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের হিসাব মির্জা ফখরুল সাহেবকে দিতে হবে।
খেলাপি ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের সমালোচনা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অর্থনীতিবিরাও এখন পোলারাইজড হয়ে গেছে। বিএনপি মার্কা অর্থনীতিবিদ। এখন তাদের মনের যে অসন্তোষ, ক্ষমতায় না থাকার যে বেদনা, ক্ষমতায় আসলে যে সুযোগ-সুবিধা পেতো সে স্বপ্ন তাদের ভেস্তে গেছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনেক অর্থনীতিবিদ রয়েছেন তারা বলেছেন পরিমিত, সাহসী বাজেট হয়েছে। চ্যালেঞ্জ আছে, সেটা হচ্ছে বাস্তবায়ন। সেই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার জন্য সরকারি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।
‘আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছি এ চ্যালেঞ্জও অতিক্রম করতে পারব। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ডলার সংকট নিয়ন্ত্রণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি বৃদ্ধি করা, পারিবারিক কার্ডের মাধ্যমে এ সংকট মোকাবিলার স্কিম আছে। সোশ্যাল সেফটি নেটওয়ার্ক প্রশস্ত করা হয়েছে।’
এ সময় আওয়ামী লীগের অনেকেই দুর্নীতি করে অনেক অর্থ কামিয়েছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দলের দুর্নীতিবাজদের তালিকা দেন। আমরা দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদককে বলব তদন্ত করতে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।