TT Ads

বরগুনা প্রতিনিধি :
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে প্রেম হয় বরগুনা থেকে নেতৃত্ব দেওয়া নিলয় এবং আনিকার।

এ যেন মোহাম্মদ শেখ শাহিনুর রহমানের ‘প্রেম ও বিদ্রোহের মিছিল’ কবিতার প্রথম দুই লাইনের মতো – ‘মিছিলেও প্রেম হোক, ভেঙে যাক মোহ।

তুমি সাজো ব্যারিকেড, আমি বিদ্রোহ’। কবিতার এই পংক্তির বাস্তব রূপটাই দিলেন নিলয়-আনিকা।

বরগুনা পৌরসভার বাসিন্দা মীর রিজন মাহমুদ নিলয় (২২)। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের বরগুনার সমন্বয়কারী। বরগুনা সদরের হাইস্কুল সড়কের মরহুম মীর মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে তিনি। একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছেন নিলয়।

অন্যদিকে, বরগুনা পৌরসভার কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা ফৌজিয়া তাসনীন আনিকা (২০)। বরিশাল ব্রজমোহন কলেজের রসায়ন বিভাগে পড়ছেন তিনি।

৫ মাসের প্রেম শেষে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এ প্রেমযুগল। এদিন আসর নামাজ শেষে দারুল উলুম নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা মসজিদে কাবিন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এর আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে বিপ্লবী দুই যোদ্ধার বাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ফুল, স্নিগ্ধতা এবং গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান’। সেই আয়োজনটা অনেকটা ঘরোয়া পরিবেশেই হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারাদেশের মতো উত্তাল ছিল বরগুনাও। জেলার সব স্কুল-কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে। সে সময় আন্দোলনকারীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যারা তাদের মধ্যে নিলয় অন্যতম।

জুলাই মাসের শেষের দিকের কথা, আন্দোলন আরও তীব্রতর হয়। ঠিক সে সময় একে অপরের প্রেমে পরে যান নিলয় ও আনিকা। কিন্তু এই ক্রান্তিলগ্নে সবার আগে দেশ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারপর দেখা যাবে – এই ভেবে দুজনের কেউ কাউকে মনে কথা জানায়নি।

কিন্তু মনের গহীনে জন্ম নেওয়া ভালোবাসা তো সব যুক্তি মানতে নারাজ। একে অপরের প্রতি আবেগ-ভালোবাসার কথা প্রকাশ পেয়েই যায় এক সময়।

তবে বিয়েটা সেরেছেন কথামতোই। ফ্যাসিস্ট পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার যখন গত ৫ মাস ধরে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে এলো তখনই বিয়ের আয়োজন করলেন এ তরুণ জুটি।

তাদের এই বন্ধনে খুশি স্থানীয়রাও। তারা বলছেন, আজকার এই ছাড়াছাড়ির যুগে বছরের পর বছর সম্পর্কে থাকার পরেও মানুষ একজন আরেকজনকে ছেড়ে যায়। সেখানে মাত্র পাঁচ মাসের সম্পর্কে একে অপরকে চিনেছেন, জেনেছেন, বুঝেছেন, ভালোবেসেছেন নিলয়-আনিকা।

এদিকে জীবনের নতুন অধ্যায়ে যাতে সুখে-শান্তিতে থাকতে পারে সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন এ নবদম্পতি।

ফৌজিয়া তাসনীন আনিকা বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে আমাদের পরিচয় হয়েছিল এবং আমরা দুজন দুজনকে পেয়ে সত্যি খুব খুশি, আলহামদুলিল্লাহ। এই পূর্ণতার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ পেয়েছি যে নিলয় কথা দিয়ে কথা রেখেছেন।

মীর রিজন মাহমুদ নিলয় বলেন, আলহামদুলিল্লাহ এই প্রেম জীবনে এসেছিল বলেই আজ আমি সত্যি আনন্দিত এবং এই পূর্ণতা আমাদের ভালোবাসার সত্যতার এবং পবিত্রতার প্রমাণ।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *