TT Ads
Spread the love

শাহিন সুমন :
‘পর্যটক সার্ভিস’ হিসেবে বাণিজ্যিক পরিচালনায় যুক্ত হল প্যাডেল স্টিমার মাহসুদ। দিনের আলোতে নদীর সৌন্দর্য উপভোগের কথা মাথায় রেখে এই ডে সার্ভিস শুরু হচ্ছে।

পর্যটন সার্ভিস হিসেবে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ- এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল আজ (শনিবার)। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শতবর্ষী এ প্যাডেল স্টিমার যাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকীসহ সরকারের একাধিক সিনিয়র সচিব, সচিব ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

স্টিমারটি সপ্তাহে শুক্রবার দিন ঢাকা থেকে বরিশাল যাবে এবং শনিবার বরিশাল থেকে ছাড়বে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

উদ্বোধন আজ হলেও নৌযানটি ‘পর্যটক সার্ভিস’ হিসেবে বাণিজ্যিক পরিচালনায় যুক্ত হচ্ছে ২১ নভেম্বর থেকে।

সিদ্ধান্তনুযায়ী প্রতি শুক্রবার ঢাকা সকাল সাড়ে ৮টায় ছেড়ে পিএস মাসুদ বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে বরিশালে পৌছবে। আবার প্রতি শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বরিশাল থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় পৌছার কথা রয়েছে।

১৮৭৪ সালে বাষ্পীয় প্যাডেল হুইল জাহাজের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর-বরিশাল-ঝালকাঠি খুলনা রুটে যে রকেট স্টিমার সার্ভিস চালু হয়েছিল, ২০২০ সালে তা অনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

সেই ব্রিটিশ শাসনাধীন ১৯২৮ সালে কলকাতার গার্ডেন রিচ ওয়ার্কশপে তৈরী মাহসুদ দৈর্ঘ্যে ২৩৫ ফুট, ১৯৮৩ সালে কয়লা থেকে ডিজেন ইঞ্জিন রূপান্তর করা হয়।

প্যাডেল স্টিমার ছিল একসময়ের রাজকীয় বাহন নদীপথের রাজা;আভিজাত্য, নিরাপত্তার প্রতীক, কয়েকযুগ আগেও স্টিমার ছিল গতিতে সবচেয়ে দ্রুতগামী তাই রকেট নামে ডাকা হত।

একসময়ে নদীপথে রাজত্ব করত প্যাডেল স্টিমার গাজী, কিউই, মাহসুদ, অস্ট্রিচ, লেপচা, টার্ন এসব সহ অন্যান্য প্যাডেল স্টিমার।

প্রায় শতবছরের ইতিহাসের সাক্ষী পিএস মাহসুদ ফের চালু হওয়ায় অনেকেই ইতিমধ্যে তার যাত্রায় সামিল হতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

তবে ২১ নভেম্বর থেকে পিএস মাহসুদ বাণিজ্যিক পরিচালনায় আসলেও ঢাকা-বরিশাল নৌপথে যাত্রীভাড়া এখনো নির্ধারণ হয়নি।

নৌযানটিতে প্রথম শ্রেণীতে ১২টি কক্ষে ২৪টি শয্যা ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে সাধারণ ২৪টি শয্যা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন শ্রেণিরই ভাড়া নির্ধারণ হয়নি।

তবে সংস্থাটির সূত্র মতে, নৌযানটির পরিচালন ব্যয়ের হিসেবে প্রথম শ্রেণীর একজন যাত্রী প্রতি ব্যয় ৪ হাজার টাকার ওপরে পড়তে পারে।

তবে প্রশ্ন হল সরকারী সত্বাবধানে থাকা এসব জাহাজ বেশী দিন সার্ভিস দিতে পারে না । নানা ধরনের জটিলতা ও লস দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। এই সার্ভিস কতদিন থাকবে সে নিয়েও প্রশ্ন জনসাধারনের মনে।

এসব কিছুর পরেও বিশ্ব ঐতিহ্যের প্যাডেল স্টিমার আবার ফিরছে ঢাকার বুড়িগঙ্গা থেকে চাঁদপুরের মেঘনা-পদ্মা হয়ে বরিশালের কীর্তনখোলায়। কিন্তু তা সার্বজনীন যাত্রী পরিবহনে না আসায় কিছুটা হতাশা থাকছে বরিশাল বাসীর মনে।

নদীমাতৃক বাংলাদেশের শত বছরের ঐতিহ্য এবং শতবর্ষী জাহাজের ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদকে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে পর্যটন সার্ভিসে যুক্ত করার উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। এরই অংশ হিসেবে আজ এটির উদ্বোধন হলো।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *