নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশালের মুলাদীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অস্ত্র ও ককটেল বোমা সহ সন্ত্রাসী আব্বাস হাওলাদার ও তার ভাই বশির হাওলাদারকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মুলাদী উপজেলার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর একটি দল ও পুলিশের যৌথ অভিযানে উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের চর কমিশনার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় তাদের বাড়ী থেকে ১৩টি ককটেল বোমা, ১টি রামদা, ২টি চাইনিজ কুড়াল ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আব্বাস ও বশির মুলাদী উপজেলার আব্দুল রব হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, গ্রেফতার আব্বাস ও তার ভাই কুখ্যাত অপরাধী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বিগত সরকারের আমলে মুলাদী উপজেলা সহ বিভিন্ন জায়গায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব হারুন বিশ্বাস ও তার ভাই কাজিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মন্টু বিশ্বাসের সহযোগী হিসেবে ক্ষমতা ব্যবহার করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, আব্বাস এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র প্রদর্শন, ভূমি দখল ও চাঁদাবাজিসহ আরও অসংখ্য অপরাধে জড়িত ছিল। গত ৫ আগস্টের পর আব্বাস ও তার দোসররা এলাকায় আত্মগোপনে ছিলো। আব্বাসের পরিবার এলাকায় ভূমিদস্যু ও মাফিয়া হিসেবে পরিচিত। ইতোমধ্যে তার নামে একটি হত্যা মামলা সহ দুইটি মামলা রয়েছে এবং দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় পুলিশের ধরা ছোয়ার বাইরে ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তার বাড়িতে তল্লাশি করে বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র, নগদ অর্থ ও ককটেল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে মীরগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় আব্বাসের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও মিষ্টি বিতরণ করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে আব্বাস হাওলাদার সাধারণ মানুষের উপর বছরের পর বছর অত্যাচার চালিয়েছেন। তার ভয়ে বহু মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আব্বাস হাওলাদারের কারণে এলাকায় দীর্ঘদিন ভয়-আতঙ্ক বিরাজ করেছে। তাই সেনাবাহিনী ও পুলিশের এই পদক্ষেপকে তারা ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাজিরচর ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকায় স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এলাকায় আনন্দের সাথে মিষ্টি বিতরণ করেন স্থানীয়রা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সালাম হাওলাদার, কামাল হাওলাদার, সবুজ ব্যাপারী, সাহিন হাওলাদার, খালেক খান, লিটন মৃধা, কালাম হাওলাদার, ফাতেমা বেগম প্রমুখ।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতার আব্বাসের বিরুদ্ধে পূর্বেও মামলা রয়েছে। এছাড়া নতুন করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।