TT Ads

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) কর্তৃক প্লান অনুমোদনে জটিলতা ও হয়রানির প্রতিবাদে ১১ টি দাবি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনটি করেছেন ‘বরিশাল নাগরিক অধিকার অন্দোলন’। আগামী ৭ দিনের মধ্যে দাবিগুলো মেনে না নিলে পরবর্তীতে বিক্ষোভ সমাবেশ, সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও, অবস্থান ধর্মঘট, গণঅনশন সহ কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে। সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব প্রকৌঃ মো. আবু ছালেহ।

তিনি বলেন, বরিশাল নগরবাসী প্রায় দেড় বছর ধরে প্লান অনুমোদনে জটিলতা থাকায় হাজার হাজার নির্মাণ শ্রমিক, জমির মালিক, ব্যবসায়ী, ইঞ্জিনিয়ার ও আর্কিটেক্ট বৃন্দ সহ নান পেশার মানুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ‘বরিশাল নাগরিক অধিকার অন্দোলন’ এর পক্ষ থেকে গত ২৪/১১/২০২৪ তারিখ সিটি কর্পোরেশন প্রশাসক বরাবর ১১ দফা দাবি উল্লেখ করে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল-অদ্যাবধি সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোন প্রকার আলোচনা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি।

তাই বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলন এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এসোসিয়েশন অব বিল্ডিং কনসালটেন্ট, বরিশালডেভেলপার এসোসিয়েশন, সিমেন্ট ও লৌহজাত প্রভা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন, ইলেকট্রিশিয়ান শ্রমিক ইউনিয়ন, জমির মালিকগন সহ নানা পেশার লোকজন মিলে ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সম্মুখে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারাও এ অন্দোলনের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছেন। কর্তৃপক্ষ সাড়া না দেওয়ায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

দাবিগুলো হল-
১. বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে জমা থাকা সকল প্লান অনতিবিলম্বে অনুমোদন দিতে হবে।
/
২. ইতোমধ্যে পাশকৃত সকল প্লান (যাহার চালান, হোল্ডিং এবং পানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে) অনতিবিলম্বে ডেলিভারি দিতে হবে।

৩. বরিশাল শহরের অধিকাংশ রাস্তার প্রশস্ততা কম তাই রাস্তার প্রশস্ততার ক্ষেত্রে গতানুগতিক ও প্রচলিত নিয়মে প্লানের অনুমোদন দিতে হবে।

৪. সিটি কর্পোরেশনের ৪র্থ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বরিশাল ইমারত নির্মান নীতিমালা-২০২০ পূর্ণবহাল করতে হবে।

৫. দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে প্লান অনুমোদন সহ সকল ধরনের সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে “ওয়ান স্টপ সার্ভিস” ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৬. অতি পুরাতন অকার্যকর মাষ্টার প্লান (যাহা ২০২০ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ হইয়াছে) -এর অযুহাত দিয়ৈ LUC দেয়ার ক্ষেত্রে রেড জোন, শিল্পাঞ্চল জোন, কৃষি জোন, ইকোপার্ক জোন দেখিয়ে জনগনকে যে হয়রানী করা হচ্ছে তা লাঘব করতঃ অকার্যকর ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরাতন মাষ্টার প্লান বাতিল করতে হবে।

৭. ইমারত নিমার্ণ বিধিমালা-১৯৯৬ এর আওতায় প্লান অনুমোদনের কথা বললেও কর্তৃপক্ষ কেবল মাত্র রাস্তার ক্ষেত্রে উক্ত বিধিমালা অনুসরণ করে কিন্তু প্লান পাশের ফিসহ অন্যান্য বিষয়ে মনগড়া আইন বাস্তবায়ন করছেন তাই স্ক-বিরোধী এ নিয়ম বাতিল করতে হবে।

৮. যে সমস্ত এলাকায় কিংবা বাড়িতে পানির সরবরাহ লাইন সংযোগ করা হয়নি, সেই সব এলাকার জনগনকে পানির বিল হইতে অব্যহতি দিতে হবে।

৯. ভবনে বসবাস শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত হোল্ডিং ট্যাক্স ও পানির বিল নেওয়া বন্ধ করতে হবে।

১০. পূর্বে ভরাটকৃত ব্যক্তিগত রেকর্ডিয় জমির শ্রেনীতে পুকুর উল্লেখ থাকলে প্লান অনুমোদন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না করে সরজমিন তদন্ত পূর্বক প্লান অনুমোদন দিতে হবে।

১১. খালের পাড়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের রেকর্ডিয় জমির ক্ষেত্রে ইমারত নির্মানে জমি ছাড়ের ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত ও বান্ধন ভিত্তিক সমাধান করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ‘বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলন’ কমিটির আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান তুইয়া।

তিনি বলেন, অরাজনৈতিক সংগঠনটি নগরীর বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। নাগরিক সমস্যাগুলো সমাধান না করা হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কাশিপুর প্লানিং হাউজ প্রকৌঃ এ,এফ,এম হারুন অর রশীদ, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ নিয়াজ মাহমুদ বেগ, প্রকৌঃ মোঃ আকতার হোসেন ও আনোয়ার হোসোইন খান। যুগ্ম সদস্য সচিব ডিজাইনার রিয়াদুল আহসান, গোপাল চন্দ্র শাহা ও মো. সোহেল রানা। সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রকৌঃ হুমায়ুন কবির, প্রকৌঃ মো. শাহ আলম সিকদার, প্রকৌঃ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ও মো. আমিনুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *