নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশালে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায়ের অভিযোগে দুই ভুয়া সাংবাদিককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন—মো. মামুন রেদোয়ান (পিতা: হাকিম আলী, ভাটার খাল) এবং জাহাঙ্গীর মোল্লা (পিতা: সালাম মোল্লা, পলাশপুর)।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর হাসপাতাল রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে ১৫–২০ জনের একটি চক্র সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে শহরের বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করে আসছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতাল রোডের খন্দকার ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী মো. লিয়াকত আলী খন্দকার এই চক্রের সর্বশেষ শিকার। তিনি জানান, চলতি মাসের ৬ ডিসেম্বর মামুন রেদোয়ান নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জানান যে তার কাছে একটি ‘গোপন ভিডিও’ রয়েছে। ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। ৭ ডিসেম্বর দোকানে এসে কোনো প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলেও ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় সে। পরদিন আবার ৮০ হাজার টাকা দাবি করলে লিয়াকত আলী বিষয়টি স্থানীয় ব্যবসায়ী, এলাকাবাসী ও প্রকৃত সাংবাদিকদের জানান।
৯ ডিসেম্বর সকালে পূর্বনির্ধারিত সময়ে মামুন রেদোয়ান ও জাহাঙ্গীর মোল্লা উপস্থিত হলে জনতা দুজনকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চক্রের অন্যান্য সদস্যরা পালিয়ে যায়।
এ সময় উপস্থিত হাওয়া বেগম নামের আরেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, চলতি মাসের ৪ ডিসেম্বর মামুন রেদোয়ান তাকে ও তার মেয়েকে খাবারে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে দুই লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী লিয়াকত আলী জানান, তিনি ১৫–২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তিনি বলেন, “আমি বয়স্ক মানুষ, দোকান চালিয়ে সংসার চলে। আমার সঙ্গে যে প্রতারণা হয়েছে তার কঠোর বিচার চাই।”
বরিশালের ১৫টি সাংবাদিক সংগঠনের সমন্বিত জোটের মুখপাত্র মো. খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, “ভুয়া সাংবাদিকতার চক্র শহরে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। রিমান্ডের মাধ্যমে পুরো চক্রের তথ্য বেরিয়ে আসবে।”
পেশাদার ৩৫ সাংবাদিক সংগঠনের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মামুনুর রশীদ নোমানী বলেন, “সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে অপকর্ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এই চক্র নির্মূল করতে সব সাংবাদিক একযোগে কাজ করবে।”
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আল মামুন-উল-ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”






