TT Ads

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক সংঘটিত কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকসমাজ প্রতিবাদলিপি দিয়েছে।

রোববার (১৬ নভেম্বর) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য- এর সমীপে শিক্ষকদের দেয়া এ প্রতিবাদ লিপিতে ৫০ জনের সাক্ষর রয়েছে।

প্রতিবাদ লিপিতে শিক্ষক সমাজ বলেন- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ হিসেবে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয় কতিপয় ঘটনার উদ্ভব হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমরা মনে করি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু- স্বাভাবিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে এমন কার্যক্রম বন্ধ হওয়া জরুরি।

ঘটনাসমূহের কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

১। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৩০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে নিয়োগপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য আইন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যাবলির প্রশাসনিক তত্ত্বাবধান করবেন মর্মে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও কোনো একাডেমিক নথিতে তাঁর মতামত বা অবজারভেশন গ্রহণ না করেই সকল একাডেমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, যা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। উপ-উপাচার্যকে পাশ কাটিয়ে গৃহীত এই সকল একাডেমিক সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে ভবিষ্যতে কঠিন আইনি প্রশ্ন উত্থাপিত হবে এবং এই সকল অবৈধ সিদ্ধান্তের স্টেকহোল্ডার হিসেবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ মারাত্মকভাবে বিপদগ্রস্ত হবে বিধায় এই বে-আইনি চর্চা অনতিবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন ।

২। গত ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে উপ-উপাচার্যের কার্যালয় থেকে সকল বিভাগের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একাডেমিক অগ্রগতি সংক্রান্ত একটি সভা আহ্বান করে চিঠি প্রদান করা হয়। উপ-উপাচার্যের এই পত্রকে বিধিবর্হিভূত বলে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত একটি পাল্টা পত্র দেয়া হয়। যে বিধি ও যুক্তিতে এই চিঠিকে বিধিবহির্ভূত বলা হয়েছে তা এতই ঠুনকো এবং আইনের অপব্যাখ্যাপ্রসূত যে, উক্ত যুক্তি ও অপব্যাখ্যা অনুযায়ী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ যাবৎকালে অনুষ্ঠিত বিভাগসমূহের একাডেমিক কমিটির সভা, পরীক্ষা কমিটির সভা ও প্রাধ্যক্ষের হল প্রশাসনিক সভা ইত্যাদি অনেক কিছু অবৈধ হয়ে যায়। ফলে উক্ত পত্রের বলে বিশেষ করে পরীক্ষা কমিটির এযাবৎকালের সভাসমূহের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত ও কার্যাবলি অবৈধ হয়ে যাওয়ায়রেজিস্ট্রারের উক্ত পত্র পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কর্মকাণ্ডের জন্য এক মহা বিপর্যয় হিসেবে আপতিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে উক্ত পত্রটি অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করা অত্যন্ত জরুরি।

৩। উপ-উপাচার্যের আহুত সভায় চেয়ারম্যানবৃন্দকে কেবল সভায় অংশগ্রহণ না করার অনুরোধেই কর্তৃপক্ষ ক্ষান্ত থাকেনি বরং উপ-উপাচার্যের সভায় অংশগ্রহণ চাকুরি-সংক্রান্ত বিধিবিধানের পরিপন্থি বলে পুনরায় একটি চিঠি উপাচার্যের নির্দেশে রেজিস্ট্রার ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে ইস্যু করেন। উপ-উপাচার্যের আহুত সভায় চেয়ারম্যানদের যোগদানকে চাকুরি-সংক্রান্ত বিধিবিধানের পরিপন্থি বলে অভিহিত করার ঘটনা এবং চেয়ারম্যানদের উদ্দেশ্যে উক্ত চিঠির ভীতিকর ও অপ/মানকর ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজকে অত্যন্ত ব্যথিত এবং ক্ষুব্ধ করেছে।

প্রতিবাদ লিপিতে শিক্ষকবৃন্দ উপরে বিবৃত এ জাতীয় সকল ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। যেখানে শিক্ষকরা বলেন- আমরা মনে করি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সংকটের পরও শিক্ষকবৃন্দের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে এখন পর্যন্ত শিক্ষাকার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা, মনন ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে দেশে-বিদেশে সাফল্যের সাথে কর্মক্ষেত্রে নিযুক্ত হতে পারছে। এ অবস্থায় আমরা প্রত্যাশা করি সকল রকম স্বৈরাচারী মনোবৃত্তি পরিত্যাগ করে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য সকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতির জন্য নিজ নিজ জায়গা থেকে তাদের ইতিবাচক কার্যক্রম অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করবেন।

এই প্রত্যাশায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজের পক্ষে নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ পত্রটি জমা দেন বলেও প্রতিবাদ লিপিতে উল্লেখ করা হয়।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *