TT Ads

বরিশালের খবর ডেস্ক :
আওয়ামী দুঃশাসনের আমলে গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সদররোডে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখা।

গণঅধিকার পরিষদ বরিশাল মহানগরের সভাপতি মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদারের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রাসেল।

গণঅধিকার পরিষদ বরিশাল মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ফরহাদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদ বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি মো. শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম হাসান, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর হোসেন আকাশসহ নেতারা।

এ সময় বক্তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা তার প্রভু রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে গিয়েও অডিও রেকর্ড প্রকাশের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একের পর এক উসকানি প্রদান করছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার

ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে গুপ্ত হামলা, ঝটিকা মিছিল ও কথিত গণসংযোগ করেছে। এমনকি গত ২ ফেব্রুয়ারি জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে পুলিশের গাড়ি থেকে পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নিয়েছে। ছাত্র-নাগরিক গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে উৎখাত করতে দেশব্যাপী নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সারাদেশে হরতাল-অবরোধের ঘোষণাও দিয়েছে।

বক্তারা বলেন, সরকারি প্রথম ধাপের তালিকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৮২৬ জন শহীদ ও ১১৩০৬ জনের গুরুতর আহত হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি বলে আন্দোলনকারী নেতারা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা মনে করেন। ছাত্র-জনতা-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ইতিহাসের বর্বরোচিত হামলা, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েও অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে, গ্রেপ্তাররা জামিনে মুক্ত হচ্ছে।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এরই মধ্যে ৫৭২ জন আসামি জামিনে মুক্তি পেয়েছে। গত ৮ আগস্ট আপনার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গণহত্যাকারী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের বিষয়ে যতটা কঠোর হওয়া দরকার ছিল, আমাদের কাছে তার বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের ও শঙ্কার।

বক্তারা বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সহস্রাধিক মানুষ হত্যা, হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করা, রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লেলিয়ে চালানো ইতিহাসের এ জঘন্যতম গণহত্যার সঠিক বিচার না হলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থাকে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথের আপসহীন নেতৃত্ব ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন হিসেবে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ একদলীয় ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েমে বিগত ১৬ বছরের সব শুম, খুন, উন্নয়নের নামে লুটপাট ও অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে বিচার নিষ্পত্তি ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় তারা ৫ দফা দাবির কথা তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-জুলাই -আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিগত ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত ও শহীদদের সঠিক তালিকা তৈরি, ক্ষতিপূরণ এবং যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

জুলাই গণহত্যায় জড়িত বিদেশে পলাতক গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনাসহ সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের রাজনীতি নিষিদ্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

ফ্যাসিবাদের আমলে উন্নয়নের নামে লুটপাট, অর্থ পাচারে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করা। জন-আকাঙ্ক্ষার নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে কার্যকর সংস্কার নিশ্চিতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা।

বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেজিমে সংগঠিত গুম-খুন ও ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ভুয়া নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা।

মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। যা নগরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ৫ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *