নিজস্ব প্রতিবেদক :
দরপত্রে অনিয়ম ও প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং একই পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বর্তমানে তিনি খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুদক পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক পার্থ চন্দ্র পাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বাকি তিন আসামি হলেন— বরিশালের ঠিকাদার শিপ্রা রানী পিপলাই, তার ছেলে সোহাগ কৃষ্ণ পিপলাই এবং স্বামী সত্য কৃষ্ণ পিপলাই।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে এমএসআর সামগ্রী কেনার জন্য ৫ কোটি টাকার এপিপি অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ডা. শামীম ২ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার দরপত্র আহ্বান করেন।
দরপত্রে গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা, ওষুধ, কেমিক্যাল, আসবাবপত্র ও কিচেন সামগ্রী কেনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। ছয়টি গ্রুপে দরপত্র বিক্রি দেখানো হলেও চারটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে—
মেসার্স আহসান ব্রাদার্স, পিপলাই এন্টারপ্রাইজ, বাপ্পী ইন্টারন্যাশনাল ও শহিদুল ইসলাম।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রধান হিসেবে ডা. শামীম তিনটি প্রতিষ্ঠানকে উপযুক্ত বিবেচনা করে কার্যাদেশ প্রদান করেন। কিন্তু তদন্তে দেখা যায় এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা পিপলাই পরিবারের সদস্যদের নামে হলেও পরিচালনা করেন একই ব্যক্তি সোহাগ কৃষ্ণ পিপলাই।
আহসান ব্রাদার্সের মালিক দেখানো হয় তার বাবা সত্য কৃষ্ণ পিপলাইকে
বাপ্পী ইন্টারন্যাশনালের মালিক তার মা শিপ্রা রানী পিপলাই
আর পিপলাই এন্টারপ্রাইজ সোহাগের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান
তিন প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাও একই— ৮৩৭/৮৩৮ উত্তর কাটপট্রি, বরিশাল সদর।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, একই পরিবারের তিন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে দরপত্রে কৃত্রিম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে কাজ গ্রহণ করা হয়েছে। যা পিপিআর বিধিমালা ২০০৮-এর ১২৭(৩)(খ) অনুযায়ী চক্রান্তমূলক কার্য হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বাদী কর্মকর্তা পার্থ চন্দ্র পাল বলেন, “একই পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান তিনটিকে মূল্যায়ন কমিটির মাধ্যমে কার্যাদেশ দেওয়ার ঘটনা ইচ্ছাকৃত চক্রান্তেরই প্রমাণ। মামলা রেকর্ডের পর নথি সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত ডা. শামীম আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো ও ভিত্তিহীন। আমাকে ষড়যন্ত্র করে জড়ানো হয়েছে।




