এবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের প্রার্থীতা বাতিল করলো ইরান। রোববার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও বাদ দেওয়া হয় মাহমুদের নাম।
১৯ মে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা নিহত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য চূড়ান্তভাবে ছয় প্রার্থী হচ্ছেন-মাসুদ পেজেশকিয়ান, মোস্তফা পুরমোহাম্মাদী, সাঈদ জালিলি, আলি রেজা যাকানি, আমির হোসেন কাজিজাদেহ হাশেমি ও মোহাম্মদ বাকের কলিবাফ।
এদের মধ্যে মাসুদ পেজেশকিয়ান বর্তমান পার্লামেন্ট সদস্য। তিনি মোহাম্মদ খাতামির শাসনামলের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মন্ত্রী। মোস্তফা পুরমোহাম্মাদী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সরকারের বিচারমন্ত্রী ছিলেন।
ড. সাঈদ জালিলি ইরানের সাবেক প্রধান পরমাণু আলোচক এবং দেশের নীতি নির্ধারণী পরিষদ সদস্য। তিনি ১৩তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইব্রাহিম রাইসির প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। আলি রেজা যাকানি তেহরানের মেয়র ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। তিনিও ইব্রাহিম রাইসির প্রতি সমর্থন জানিয়ে গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। আরেক প্রার্থী আমির হোসেন কাজিজাদে হাশেমি একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। মোহাম্মদ বাকের কলিবাফ হচ্ছেন তেহরানের সাবেক মেয়র ও ইরানের পার্লামেন্টের বর্তমান স্পিকার।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ৮০ জন রাজনীতিবিদ ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল বা অভিভাবক পরিষদে নাম নিবন্ধন করেছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ছয় জনের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদ ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পরপর দুই মেয়াদে ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি পুনরায় প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রার্থিতা বাতিল করে দেয় গার্ডিয়ান কাউন্সিল। এর পরপরই তিনি দেশের পুরো নির্বাচন ব্যবস্থার কঠোর সমালোচক হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি তিনি প্রকাশ্যে শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিরও সমালোচনা করেন। ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও বাধা দেয়া হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, এবারও তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেবে না দেশের শক্তিশালী গার্ডিয়ান কাউন্সিল। শেষ পর্যন্ত সেই ধারণাই সত্যে পরিণত হলো।